সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

তাওহীদের হেফাযত ও শিরকের সকল পথ বন্ধ করার ক্ষেত্রে নবী মুস্তাফা (স:) এর অবদান।

#তাওহীদের হেফাযত ও শিরকের সকল পথ বন্ধ করার ক্ষেত্রে নবী মুস্তাফা (স:) এর অবদান।
১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন,

لَقَدْ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مِنْ أَنْفُسِكُمْ . (التوبة: ১২৮)

‘‘নিশ্চয়ই তোমাদের কাছে তোমাদের মধ্য থেকেই একজন রাসূল আগমন করেছেন।’’ (তাওবা: ২৮)

২। সাহাবী আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন,

 لا تجعلوا بيوتكم قبورا ولا تجعلوا قبري عيدا وصلوا علي فإن صلاتكم تبغلني حيث كنتم.

‘‘তোমাদের ঘরগুলোকে তোমরা কবর বানিও না, আর আমার কবরকে ঈদে পরিণত করো না। আমার উপর তোমরা দরূদ পড়ো। কারণ তোমরা যেখানেই থাকোনা কেন, তোমাদের দরূদ আমার কাছে পৌঁছে যায়। (আবু দাউদ)

৩। আলী ইবনুল হুসাইন রা. থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি একজন লোককে দেখতে পেলেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কবরের পাশে

একটি ছিদ্র পথে প্রবেশ করে সেখানে কিছু দোয়া-খায়ের করে চলে যায়। তখন তিনি ঐ লোকটিকে এধরনের কাজ নিষেধ করে দিলেন। তাকে আরো বললেন, ‘‘আমি কি তোমার কাছে সে হাদীসটি বর্ণনা করবো না, যা আমি আমর পিতার কাছ থেকে শুনেছি এবং তিনি শুনেছেন আমার দাদার কাছ থেকে, আর আমার দাদা শুনেছেন রাসূল (স:) এর কাছ থেকে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন,

لا تتخذوا قبري عيدا، ولا بيوتكم قبورا، فإن تسليمكم ليبلغني أين كنتم. (رواه فى المختارة)

‘‘তোমরা আমার কবরকে ঈদে [মেলায়] পরিণত করোনা আর তোমাদের ঘরগুলোকে কবরে পরিণত করোনা। তোমরা যেখানেই থাকোনা কেন তোমাদের সালাম আমার কাছে পৌছে যায়’’

এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায়ঃ

১। সূরা তাওবার لقد جاءكم رسول من أنفسكم আয়াতের তাফসীর।

২। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বীয় উম্মতকে কবর পূজা তথা শিরকী গুনাহর সীমারেখা থেকে বহুদূরে রাখতে চেয়েছেন।

৩। আমাদের জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মমত্ববোধ, দয়া, করুণা এবং আমদের ব্যাপারে তার তীব্র আগ্রহের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

৪। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যিয়ারত সর্বোত্তম নেক কাজ হওয়া সত্বেও বিশেষ উদ্দেশ্যে তাঁর কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছেন।

৫। অধিক যিয়ারত নিষিদ্ধ করেছেন।

৬। ঘরে নফল ইবাদত করার জন্য উৎসাহিত করেছেন।

৭। ‘‘কবরস্থানে নামাজ পড়া যাবে না’’ এটাই সালাফে-সালেহীনের অভিমত।

৮। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কবরস্থানে নামায কিংবা দরূদ না পড়ার কারণ হচ্ছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর পঠিত দরূদ ও সালাম দূরে অবস্থান করে পড়লেও তাঁর কাছে পৌঁছানো হয়। তাই নৈকট্য লাভের আশায় কবরস্থানে দরূদ পড়ার কোন প্রয়োজন নেই।

৯। ‘আলমে বরযখে’ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে তাঁর উম্মাতের আমল দরূদ ও সালামের মধ্যে পেশ করা হয়।

https://www.facebook.com/Salafe19/

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সূরা বাকারার ১৬ নং আয়াতের তাফসীর। এবং সূরা তাওবার ২৪ নং আয়াতের তাফসীর।

##সূরা বাকারার ১৬ নং আয়াতের তাফসীর। এবং সূরা তাওবার ২৪ নং আয়াতের তাফসীর। ১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَتَّخِذُ مِنْ دُونِ اللَّهِ أَنْدَادًا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللَّهِ. (البقرة: 165) ‘‘মানুষের মধ্যে এমন মানুষও রয়েছে যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে সদৃশ স্থির করে, আল্লাহকে ভালবাসার ন্যায় তাদেরকে ভালবাসে।’’। (বাকারা : ১৬৫) ২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেছেন, قُلْ إِنْ كَانَ آَبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ وَإِخْوَانُكُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ وَعَشِيرَتُكُمْ وَأَمْوَالٌ اقْتَرَفْتُمُوهَا وَتِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَمَسَاكِنُ تَرْضَوْنَهَا أَحَبَّ إِلَيْكُمْ مِنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ (التوبة: 24) ‘‘হে রাসূল, আপনি বলে দিন, ‘যদি তোমাদের মাতা-পিতা, সন্তান-সন্ততি, ভাই-বোন, তোমাদের স্ত্রী, আত্মীয়-স্বজন, তোমাদের অর্জিত ধন-সম্পদ, তোমাদের ঐ ব্যবসা যার লোকসান হওয়াকে তোমরা অপছন্দ করো, তোমাদের পছন্দনীয় বাড়ী-ঘর, তোমাদের নিকট আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং তাঁরই পথে জিহাদ করার চেয়ে বেশী প্রিয় হয়, তাহলে তোমরা আল্লাহর চূড়ান্ত ফায়সালা আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করো।’’ (তাওবা : ২৪) ৩। সাহাব...

নাশরাহ বা প্রতিরোধমূলক যাদু

#নাশরাহ বা প্রতিরোধমূলক যাদু ১। সাহাবী জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নাশরাহ বা প্রতিরোধমূলক যাদু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো। জবাবে তিনি বললেন, هى من عمل الشيطان. (رواه أحمد و أبوداود) ‘‘এটা হচ্ছে শয়তানের কাজ’’ (আহমাদ, আবু দাউদ) আবু দাউদ বলেন, ইমাম আহমাদ (রহ:)-কে নাশরাহ [প্রতিরোধমূলক যাদু] সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো। জবাবে তিনি বলেছেন, ‘‘ইবনে মাসউদ (রাঃ) এর [নাশরাহর] সব কিছুই অপছন্দ করতেন।’’ সহীহ বুখারীতে কাতাদাহ (রাঃ) হ'তে বর্ণিত আছে, আমি ইবনুল মুসাইয়্যিবকে বললাম, ‘‘একজন মানুষের অসুখ হয়েছে অথবা তাকে তার স্ত্রীর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে, এমতাবস্থায় তার এ সমস্যার সমধান করা কিংবা প্রতিরোধমূলক যাদু [নাশরাহ] এর মাধ্যমে চিকিৎসা করা যাবে কি? তিনি বললেন, ‘এতে কোন দোষ নেই।’ কারণ তারা এর [নাশরাহ] দ্বারা সংশোধন ও কল্যাণ সাধন করতে চায়। যা দ্বারা মানুষের কল্যাণ ও উপকার সাধিত হয় তা নিষিদ্ধ নয়।’’ হাসান (রাঃ) থেকে বর্নিত আছে তিনি বলেন, لا يحل السحر إلا الساحر ‘‘একমাত্র যাদুকর ছাড়া অন্য কেউ যাদুকে হালাল মনে করে না।’’ ইবনুল কাইয়্যিম বলে...

গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া অথবা দোয়া করা শিরক

#গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া অথবা দোয়া করা শিরক  ১০ - গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া অথবা দোয়া করা শিরক ১। আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেছেন, وَلَا تَدْعُ مِنْ دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَنْفَعُكَ وَلَا يَضُرُّكَ فَإِنْ فَعَلْتَ فَإِنَّكَ إِذًا مِنَ الظَّالِمِينَ ﴿106﴾ وَإِنْ يَمْسَسْكَ اللَّهُ بِضُرٍّ فَلَا كَاشِفَ لَهُ إِلَّا هُوَ (يونس: 106-107) ‘‘আল্লাহ ছাড়া এমন কোন সত্তাকে ডেকোনা, যা তোমার কোন উপকার করতে পারবে না এবং ক্ষতিও করতে পারবে না। যদি তুমি এমন কারো তাহলে নিশ্চয়ই তুমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত। আর আল্লাহ যদি তোমাকে কোন বিপদে ফেলেন, তাহলে একমাত্র তিনি ব্যতীত আর কেউ তা থেকে তোমাকে উদ্ধার করতে পারবে না।’’ (ইউনুসঃ ১০৬, ১০৭) ২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেছেন, فَابْتَغُوا عِنْدَ اللَّهِ الرِّزْقَ وَاعْبُدُوهُ وَاشْكُرُوا لَهُ (ألعنكبوت: 17) ‘‘আল্লাহর কাছে রিযিক চাও এবং তাঁরই ইবাদত করো’’। (আনকাবুত : ১৭) ৩। আল্লাহ তাআলা অন্য এক আয়াতে এরশাদ করেছেন,     وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنْ يَدْعُو مِنْ دُونِ اللَّهِ مَنْ لَا يَسْتَجِيبُ لَهُ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ (الأحقاف: ...