সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম কর্তৃক তাওহীদ সংরক্ষণ এবং শিরকের মূলোৎপাটন

##রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম কর্তৃক তাওহীদ সংরক্ষণ এবং শিরকের মূলোৎপাটন
১। আবদুল­াহ বিন আশশিখখির রা. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি বনী আমেরের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম এর নিকট গেলাম। আমরা তাকে উদ্দেশ্য করে বললাম, أنت سيدنا [আপনি আমাদের প্রভু] তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম বললেন, ألسيد الله [আল্লাহ তাআলাই হচ্ছেন প্রভু]। আমরা বললাম, ‘আমাদের মধ্যে মর্যাদার দিক থেকে আপনি সর্বশ্রেষ্ঠ এবং আমাদের মধ্যে সর্বাধিক দানশীল ও ধৈর্যশীল।’ এরপর তিনি বললেন,

قولوا بقولكم أو بعض قولكم ولا يستجرينكم الشيطان

‘‘তোমরা তোমাদের বলে যাও। শয়তান যেন তোমাদের উপর সওয়ার না হতে পারে।’’ (আবু দাওদ)

২। আনাস রা. থেকে বর্ণিতা্ছে, কতিপয় লোক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­ামকে লক্ষ্য করে বললো, ‘‘হে আল্লাহর রাসূল, কে আমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি, এবং আমাদের প্রভূ তনয়’’ তখন তিনি বললেন,

يا أيها الناس قولوا بقولكم ولا يستهوينكم الشيطان

أنا محمد عبد الله ورسوله ما أحب أن ترفقونى فوق منزلتى التى أنزلنى الله عز وجل.

 হে লোক সকল, তোমরা তোমাদের কথা বলে যাও। শয়তান যেন তোমাদেরকে বিভ্রান্ত ও প্রতারিত করতে না পারে। আমি হচ্ছি মুহাম্মদ, আল্লাহর বান্দা এবং তার রাসূল। আল্লাহ তাআলা আমাকে যে মর্যাদার স্থানে অধিষ্টিত করেছেন, তোমরা এর উর্ধ্বে আমাকে স্থান দিবে এটা আমি পছন্দ করি না। (নাসায়ী)

এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায় .

১। দ্বীনের ব্যাপারে সীমা লংঘন না করার জন্য মানুষের প্রতি হুশিয়ারী উচ্চারণ।

২। ‘আপনি আমাদের প্রভূ বা মনিব’ বলে সম্বোধন করা হলে জবাবে তার কি বলা উচিৎ, এ ব্যাপারে জ্ঞান লাভ।

৩। লোকেরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম এর প্রতি সম্মান ও মর্যাদার ব্যাপারে কিছু কথা বলার পর তিনি বলেছিলেন, ‘‘শয়তান যে তোমাদের উপর চড়াও না হয়।’’ অথচ তারা তাঁর ব্যাপারে হক কথাই বলেছিল। এর তাৎপর্য অনুধান করা।

৪। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম এর বাণী ما أحب أن ترفعونى فوق منـزلتى অর্থাৎ তোমরা আমাকে স্বীয় মর্যাদার উপরে স্থান দাও এটা আমি পছন্দ করিনা। একথার তাৎপর্য উপলব্ধি করা।

Facebook page

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সূরা বাকারার ১৬ নং আয়াতের তাফসীর। এবং সূরা তাওবার ২৪ নং আয়াতের তাফসীর।

##সূরা বাকারার ১৬ নং আয়াতের তাফসীর। এবং সূরা তাওবার ২৪ নং আয়াতের তাফসীর। ১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَتَّخِذُ مِنْ دُونِ اللَّهِ أَنْدَادًا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللَّهِ. (البقرة: 165) ‘‘মানুষের মধ্যে এমন মানুষও রয়েছে যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে সদৃশ স্থির করে, আল্লাহকে ভালবাসার ন্যায় তাদেরকে ভালবাসে।’’। (বাকারা : ১৬৫) ২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেছেন, قُلْ إِنْ كَانَ آَبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ وَإِخْوَانُكُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ وَعَشِيرَتُكُمْ وَأَمْوَالٌ اقْتَرَفْتُمُوهَا وَتِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَمَسَاكِنُ تَرْضَوْنَهَا أَحَبَّ إِلَيْكُمْ مِنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ (التوبة: 24) ‘‘হে রাসূল, আপনি বলে দিন, ‘যদি তোমাদের মাতা-পিতা, সন্তান-সন্ততি, ভাই-বোন, তোমাদের স্ত্রী, আত্মীয়-স্বজন, তোমাদের অর্জিত ধন-সম্পদ, তোমাদের ঐ ব্যবসা যার লোকসান হওয়াকে তোমরা অপছন্দ করো, তোমাদের পছন্দনীয় বাড়ী-ঘর, তোমাদের নিকট আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং তাঁরই পথে জিহাদ করার চেয়ে বেশী প্রিয় হয়, তাহলে তোমরা আল্লাহর চূড়ান্ত ফায়সালা আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করো।’’ (তাওবা : ২৪) ৩। সাহাব...

নাশরাহ বা প্রতিরোধমূলক যাদু

#নাশরাহ বা প্রতিরোধমূলক যাদু ১। সাহাবী জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নাশরাহ বা প্রতিরোধমূলক যাদু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো। জবাবে তিনি বললেন, هى من عمل الشيطان. (رواه أحمد و أبوداود) ‘‘এটা হচ্ছে শয়তানের কাজ’’ (আহমাদ, আবু দাউদ) আবু দাউদ বলেন, ইমাম আহমাদ (রহ:)-কে নাশরাহ [প্রতিরোধমূলক যাদু] সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো। জবাবে তিনি বলেছেন, ‘‘ইবনে মাসউদ (রাঃ) এর [নাশরাহর] সব কিছুই অপছন্দ করতেন।’’ সহীহ বুখারীতে কাতাদাহ (রাঃ) হ'তে বর্ণিত আছে, আমি ইবনুল মুসাইয়্যিবকে বললাম, ‘‘একজন মানুষের অসুখ হয়েছে অথবা তাকে তার স্ত্রীর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে, এমতাবস্থায় তার এ সমস্যার সমধান করা কিংবা প্রতিরোধমূলক যাদু [নাশরাহ] এর মাধ্যমে চিকিৎসা করা যাবে কি? তিনি বললেন, ‘এতে কোন দোষ নেই।’ কারণ তারা এর [নাশরাহ] দ্বারা সংশোধন ও কল্যাণ সাধন করতে চায়। যা দ্বারা মানুষের কল্যাণ ও উপকার সাধিত হয় তা নিষিদ্ধ নয়।’’ হাসান (রাঃ) থেকে বর্নিত আছে তিনি বলেন, لا يحل السحر إلا الساحر ‘‘একমাত্র যাদুকর ছাড়া অন্য কেউ যাদুকে হালাল মনে করে না।’’ ইবনুল কাইয়্যিম বলে...

গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া অথবা দোয়া করা শিরক

#গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া অথবা দোয়া করা শিরক  ১০ - গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া অথবা দোয়া করা শিরক ১। আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেছেন, وَلَا تَدْعُ مِنْ دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَنْفَعُكَ وَلَا يَضُرُّكَ فَإِنْ فَعَلْتَ فَإِنَّكَ إِذًا مِنَ الظَّالِمِينَ ﴿106﴾ وَإِنْ يَمْسَسْكَ اللَّهُ بِضُرٍّ فَلَا كَاشِفَ لَهُ إِلَّا هُوَ (يونس: 106-107) ‘‘আল্লাহ ছাড়া এমন কোন সত্তাকে ডেকোনা, যা তোমার কোন উপকার করতে পারবে না এবং ক্ষতিও করতে পারবে না। যদি তুমি এমন কারো তাহলে নিশ্চয়ই তুমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত। আর আল্লাহ যদি তোমাকে কোন বিপদে ফেলেন, তাহলে একমাত্র তিনি ব্যতীত আর কেউ তা থেকে তোমাকে উদ্ধার করতে পারবে না।’’ (ইউনুসঃ ১০৬, ১০৭) ২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেছেন, فَابْتَغُوا عِنْدَ اللَّهِ الرِّزْقَ وَاعْبُدُوهُ وَاشْكُرُوا لَهُ (ألعنكبوت: 17) ‘‘আল্লাহর কাছে রিযিক চাও এবং তাঁরই ইবাদত করো’’। (আনকাবুত : ১৭) ৩। আল্লাহ তাআলা অন্য এক আয়াতে এরশাদ করেছেন,     وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنْ يَدْعُو مِنْ دُونِ اللَّهِ مَنْ لَا يَسْتَجِيبُ لَهُ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ (الأحقاف: ...