সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

নেককার ও বুজুর্গ ব্যক্তিদের কবরের ব্যাপারে সীমা লংঘন করলে তা তাকে মূর্তি পূজা তথা গাইরুল্লাহর ইবাদতে পরিণত করে।

#নেককার ও বুজুর্গ ব্যক্তিদের কবরের ব্যাপারে সীমা লংঘন করলে তা তাকে মূর্তি পূজা তথা গাইরুল্লাহর ইবাদতে পরিণত করে।
১। ইমাম মালেক র. মুয়াত্তায় বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দোয়া করেছেন।

أللهم لا تجعل قبري وثنا يعبد اشتد غضب الله على قوم اتحذوا قبور أنبياءهم مساجد

‘‘হে আল্লাহ আমার কবরকে এমন মূর্তিতে পরিণত করো না যার ইবাদত করা হয়। সেই জাতির উপর আল্লাহর কঠিন গজব নাযিল হয়েছে যারা নবীদের কবরগুলোকে মসজিদে পরিণত করেছে।’’

২। ইবনে জারীর সুফিয়ান হতে, তিনি মানসূর হতে এবং তিনি মুজাহিদ হতে أفرأيتم اللات والعزى এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, ‘‘লাত’’ এমন একজন নেককার লোক ছেলেন, যিনি হজ্জ যাত্রীদেরকে ‘‘ছাতু’’ খাওয়াতেন। তরপর যখন তিনি মৃত্যু বরণ করলেন, তখন লোকেরা তার কবরে ইতেকাফ করতে লাগলো।

আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রা. থেকে আবুল জাওযা একই কথা বর্ণনা করে বলেন, ‘‘লাত’’ হাজীদেরকে ‘‘ছাতু’’ খাওয়াতেন। ইবনে আববাস থেকে বর্ণিত আছে,

 لعن رسول الله صلى الله عليه وسلم زائرات القبور والمتخذين عليها المساجد والسرج (رواه أهل السنن)

‘‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কবর যিয়ারত কারিনী (মহিলা) দেরকে এবং যারা কবরকে মসজিদে পরিণত করে আর (কবরে) বাতি জ্বালায় তাদেরকে অভিসম্পাত করেছেন। [আহলুস সুনান’ এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন]



এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায়,

১। أوثان (মূর্তি ও প্রতিমা) এর তাফসীর।

২। ‘‘ইবাদত’’ এর তাফসীর।

৩। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা সংঘটিত হওয়ার আশংকা করেছেন একমাত্র তা থেকেই আল্লাহর কাছে পানাহ চেয়েছেন।

৪। নবীদের কবরকে মসজিদ বানানোর বিষয়টিকে মূর্তি পূজার সাথে সম্পৃক্ত করেছেন।

৫। আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে কঠিন গযব নাযিলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

৬। এটি এ অধ্যায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সর্ববৃহৎ মূর্তি ‘‘লাতের’’ ইবাদতের সূচনা কিভাবে হয়েছে তা জানা গেলো।

৭। ‘‘লাত’’ নামক মূর্তির স্থানটি মূলতঃ একজন নেককার লোকের কবর।

৮। ‘‘লাত’’ প্রকৃতপক্ষে কবরস্থ ব্যক্তির নাম। মূর্তির নামকরণের রহস্য ও উল্লেখ করা হয়েছে।

৯। কবর জিয়ারত কারিনী (মহিলা) দের প্রতি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অভিসম্পাত।

১০। যারা কবরে বাতি জ্বালায় তাদের প্রতি ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অভিসাপ।

https://www.facebook.com/Salafe19/

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সূরা বাকারার ১৬ নং আয়াতের তাফসীর। এবং সূরা তাওবার ২৪ নং আয়াতের তাফসীর।

##সূরা বাকারার ১৬ নং আয়াতের তাফসীর। এবং সূরা তাওবার ২৪ নং আয়াতের তাফসীর। ১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَتَّخِذُ مِنْ دُونِ اللَّهِ أَنْدَادًا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللَّهِ. (البقرة: 165) ‘‘মানুষের মধ্যে এমন মানুষও রয়েছে যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে সদৃশ স্থির করে, আল্লাহকে ভালবাসার ন্যায় তাদেরকে ভালবাসে।’’। (বাকারা : ১৬৫) ২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেছেন, قُلْ إِنْ كَانَ آَبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ وَإِخْوَانُكُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ وَعَشِيرَتُكُمْ وَأَمْوَالٌ اقْتَرَفْتُمُوهَا وَتِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَمَسَاكِنُ تَرْضَوْنَهَا أَحَبَّ إِلَيْكُمْ مِنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ (التوبة: 24) ‘‘হে রাসূল, আপনি বলে দিন, ‘যদি তোমাদের মাতা-পিতা, সন্তান-সন্ততি, ভাই-বোন, তোমাদের স্ত্রী, আত্মীয়-স্বজন, তোমাদের অর্জিত ধন-সম্পদ, তোমাদের ঐ ব্যবসা যার লোকসান হওয়াকে তোমরা অপছন্দ করো, তোমাদের পছন্দনীয় বাড়ী-ঘর, তোমাদের নিকট আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং তাঁরই পথে জিহাদ করার চেয়ে বেশী প্রিয় হয়, তাহলে তোমরা আল্লাহর চূড়ান্ত ফায়সালা আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করো।’’ (তাওবা : ২৪) ৩। সাহাব...

নাশরাহ বা প্রতিরোধমূলক যাদু

#নাশরাহ বা প্রতিরোধমূলক যাদু ১। সাহাবী জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নাশরাহ বা প্রতিরোধমূলক যাদু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো। জবাবে তিনি বললেন, هى من عمل الشيطان. (رواه أحمد و أبوداود) ‘‘এটা হচ্ছে শয়তানের কাজ’’ (আহমাদ, আবু দাউদ) আবু দাউদ বলেন, ইমাম আহমাদ (রহ:)-কে নাশরাহ [প্রতিরোধমূলক যাদু] সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো। জবাবে তিনি বলেছেন, ‘‘ইবনে মাসউদ (রাঃ) এর [নাশরাহর] সব কিছুই অপছন্দ করতেন।’’ সহীহ বুখারীতে কাতাদাহ (রাঃ) হ'তে বর্ণিত আছে, আমি ইবনুল মুসাইয়্যিবকে বললাম, ‘‘একজন মানুষের অসুখ হয়েছে অথবা তাকে তার স্ত্রীর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে, এমতাবস্থায় তার এ সমস্যার সমধান করা কিংবা প্রতিরোধমূলক যাদু [নাশরাহ] এর মাধ্যমে চিকিৎসা করা যাবে কি? তিনি বললেন, ‘এতে কোন দোষ নেই।’ কারণ তারা এর [নাশরাহ] দ্বারা সংশোধন ও কল্যাণ সাধন করতে চায়। যা দ্বারা মানুষের কল্যাণ ও উপকার সাধিত হয় তা নিষিদ্ধ নয়।’’ হাসান (রাঃ) থেকে বর্নিত আছে তিনি বলেন, لا يحل السحر إلا الساحر ‘‘একমাত্র যাদুকর ছাড়া অন্য কেউ যাদুকে হালাল মনে করে না।’’ ইবনুল কাইয়্যিম বলে...

গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া অথবা দোয়া করা শিরক

#গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া অথবা দোয়া করা শিরক  ১০ - গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া অথবা দোয়া করা শিরক ১। আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেছেন, وَلَا تَدْعُ مِنْ دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَنْفَعُكَ وَلَا يَضُرُّكَ فَإِنْ فَعَلْتَ فَإِنَّكَ إِذًا مِنَ الظَّالِمِينَ ﴿106﴾ وَإِنْ يَمْسَسْكَ اللَّهُ بِضُرٍّ فَلَا كَاشِفَ لَهُ إِلَّا هُوَ (يونس: 106-107) ‘‘আল্লাহ ছাড়া এমন কোন সত্তাকে ডেকোনা, যা তোমার কোন উপকার করতে পারবে না এবং ক্ষতিও করতে পারবে না। যদি তুমি এমন কারো তাহলে নিশ্চয়ই তুমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত। আর আল্লাহ যদি তোমাকে কোন বিপদে ফেলেন, তাহলে একমাত্র তিনি ব্যতীত আর কেউ তা থেকে তোমাকে উদ্ধার করতে পারবে না।’’ (ইউনুসঃ ১০৬, ১০৭) ২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেছেন, فَابْتَغُوا عِنْدَ اللَّهِ الرِّزْقَ وَاعْبُدُوهُ وَاشْكُرُوا لَهُ (ألعنكبوت: 17) ‘‘আল্লাহর কাছে রিযিক চাও এবং তাঁরই ইবাদত করো’’। (আনকাবুত : ১৭) ৩। আল্লাহ তাআলা অন্য এক আয়াতে এরশাদ করেছেন,     وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنْ يَدْعُو مِنْ دُونِ اللَّهِ مَنْ لَا يَسْتَجِيبُ لَهُ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ (الأحقاف: ...