সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

যে ব্যাক্তি আল্লাহর হালালকৃত জিনিস হারাম এবং হারামকৃত জিনিসকে হালাল করার ব্যাপারে [অন্ধভাবে], আলেম, বজুর্গ ও নেতাদের আনুগত্য করলো, সে মূলত তাদেরকে রব হিসেবে গ্রহণ করলো

##যে ব্যাক্তি আল্লাহর হালালকৃত জিনিস হারাম এবং হারামকৃত জিনিসকে হালাল করার ব্যাপারে [অন্ধভাবে], আলেম, বজুর্গ ও নেতাদের আনুগত্য করলো, সে মূলত তাদেরকে রব হিসেবে গ্রহণ করলো
১। আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন,

يوشك أن تنــزل عليكم حجارة من السماء أقول: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم وتقولون : قال أبوبكر وعمر

‘‘তোমাদের উপর আকাশ থেকে পাথর বর্ষিত হওয়ার সময় প্রায় ঘনিয়ে এসেছে। কারণ, আমি বলছি, ‘‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল­াম বলেছেন।’’ অথচ তোমরা বলছো, ‘‘আবুবকর এবং ওমর (রাঃ) বলেছেন।’’

২। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রাঃ) বলেছেন, ‘‘ঐ সব লোকদের ব্যাপারে আমার কাছে খুবই অবাক লাগে, যারা হাদিসের সনদ ও ‘সিহহাত’ [বিশুদ্ধতা] অর্থাৎ হাদিসের পরস্পরা ও সহীহ হওয়ার বিষয়টি জানার পরও সুফইয়ান সওরীর মতামতকে গ্রহণ করে। অথচ আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন,

فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَنْ تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ ﴿النور:63﴾

‘‘যারা তাঁর নির্দেশের বিরোধিতা করে, তাদের এ ভয় করা উচিৎ যে, তাদের উপর কোন কঠিন পরীক্ষা কিংবা কোন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি এসে পড়ে।’’ (নূর . ৮৩)

তুমি কি জানো ফিতনা কি? ফিতনা হচ্ছে শিরক। সম্ভবত তাঁর কোন কথা অন্তরে বক্রতার সৃষ্টি করলে এর ফলে সে ধ্বংস হয়ে যাবে।

৩। আদী বিন হাতেম (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি রাসূল

اتَّخَذُوا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللَّهِ (التوبة: 31)

‘‘তারা [ইয়াহুদী ও খৃষ্টান জাতির লোকেরা] আল্লাহর পরিবর্তে তাদের ধর্মীয় নেতা ও পুরোহিতদেরকে রব হিসেবে বরণ করে নিয়েছিল।’’ (তাওবা . ৩১) তখন আমি নবীজিকে বললাম, ‘আমরাতো তাদের ইবাদত করি না।’ তিন বললেন, ‘আচ্ছা আল্লাহর হালাল ঘোষিত জিনিসকে তারা হারাম বললে, তোমরা কি তা হারাম হিসেবে গ্রহণ করো না? আবার আল্লাহর হারাম ঘোষিত জিনিসকে তারা হালাল বললেন, তোমরা কি তা হালাল হিসেবে গ্রহণ করো না? তখন আমি বললাম, হ্যা, তিনি তখন বললেন, ‘এটাই তাদের ইবাদত (করার মধ্যে গণ্য।)’ (আহমাদ ও তিরমিজী)

এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায়

১। সূরা নূরের ৬৩ নং আয়াতের তাফসীর।

২। সূরা তাওবার ৩১ নং আয়াতের তাফসীর।

৩। আদী বিন হাতেম ইবাদতের যে অর্থ অস্বীকার করেছেন, সে ব্যাপারে সতর্কীকরণ।

৪। ইবনে আববাস (রাঃ) কর্তৃক আবু বকর এবং ওমর (রাঃ) এর দৃষ্টান্ত আর ইমাম আহমাদ (রাঃ) কর্তৃক সুফইয়ান সওরীর দৃষ্টান্ত পেশ করা।

৫। অবস্থার পরিবর্তন মানুষকে এমন [গোমরাহীর] পর্যায়ে উপনীত করে, যার ফলে পন্ডিত ও পীর বুজুর্গের পূজা করাটাই তাদের কাছে সর্বোত্তম ইবাদতে পরিণত হয়। আর এরই নাম দেয়া হয় ‘‘বেলায়াত।’’ ‘আহবার’ তথা পন্ডিত ব্যক্তিদের ইবাদত হচ্ছে, তাদের জ্ঞান ও প্রজ্ঞা। অতঃপর অবস্থার পরিবর্তন সাধিত হয়ে এমন পর্যায়ে এসে উপনীত হয়েছে যে, যে ব্যক্তি গাইরুল­াহর ইবাদত করলো, সে সালেহ বা পূণ্যবান হিসেবে গণ্য হচ্ছে। পক্ষান্তরে দ্বিতীয় অর্থে যে ইবাদত করলো অর্থাৎ আল্লাহর জন্য ইবাদত করলো, সেই জাহেল বা মূর্খ হিসেবে গণ্য হচ্ছে।

Facebook page

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সূরা বাকারার ১৬ নং আয়াতের তাফসীর। এবং সূরা তাওবার ২৪ নং আয়াতের তাফসীর।

##সূরা বাকারার ১৬ নং আয়াতের তাফসীর। এবং সূরা তাওবার ২৪ নং আয়াতের তাফসীর। ১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَتَّخِذُ مِنْ دُونِ اللَّهِ أَنْدَادًا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللَّهِ. (البقرة: 165) ‘‘মানুষের মধ্যে এমন মানুষও রয়েছে যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে সদৃশ স্থির করে, আল্লাহকে ভালবাসার ন্যায় তাদেরকে ভালবাসে।’’। (বাকারা : ১৬৫) ২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেছেন, قُلْ إِنْ كَانَ آَبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ وَإِخْوَانُكُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ وَعَشِيرَتُكُمْ وَأَمْوَالٌ اقْتَرَفْتُمُوهَا وَتِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَمَسَاكِنُ تَرْضَوْنَهَا أَحَبَّ إِلَيْكُمْ مِنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ (التوبة: 24) ‘‘হে রাসূল, আপনি বলে দিন, ‘যদি তোমাদের মাতা-পিতা, সন্তান-সন্ততি, ভাই-বোন, তোমাদের স্ত্রী, আত্মীয়-স্বজন, তোমাদের অর্জিত ধন-সম্পদ, তোমাদের ঐ ব্যবসা যার লোকসান হওয়াকে তোমরা অপছন্দ করো, তোমাদের পছন্দনীয় বাড়ী-ঘর, তোমাদের নিকট আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং তাঁরই পথে জিহাদ করার চেয়ে বেশী প্রিয় হয়, তাহলে তোমরা আল্লাহর চূড়ান্ত ফায়সালা আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করো।’’ (তাওবা : ২৪) ৩। সাহাব...

নাশরাহ বা প্রতিরোধমূলক যাদু

#নাশরাহ বা প্রতিরোধমূলক যাদু ১। সাহাবী জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নাশরাহ বা প্রতিরোধমূলক যাদু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো। জবাবে তিনি বললেন, هى من عمل الشيطان. (رواه أحمد و أبوداود) ‘‘এটা হচ্ছে শয়তানের কাজ’’ (আহমাদ, আবু দাউদ) আবু দাউদ বলেন, ইমাম আহমাদ (রহ:)-কে নাশরাহ [প্রতিরোধমূলক যাদু] সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো। জবাবে তিনি বলেছেন, ‘‘ইবনে মাসউদ (রাঃ) এর [নাশরাহর] সব কিছুই অপছন্দ করতেন।’’ সহীহ বুখারীতে কাতাদাহ (রাঃ) হ'তে বর্ণিত আছে, আমি ইবনুল মুসাইয়্যিবকে বললাম, ‘‘একজন মানুষের অসুখ হয়েছে অথবা তাকে তার স্ত্রীর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে, এমতাবস্থায় তার এ সমস্যার সমধান করা কিংবা প্রতিরোধমূলক যাদু [নাশরাহ] এর মাধ্যমে চিকিৎসা করা যাবে কি? তিনি বললেন, ‘এতে কোন দোষ নেই।’ কারণ তারা এর [নাশরাহ] দ্বারা সংশোধন ও কল্যাণ সাধন করতে চায়। যা দ্বারা মানুষের কল্যাণ ও উপকার সাধিত হয় তা নিষিদ্ধ নয়।’’ হাসান (রাঃ) থেকে বর্নিত আছে তিনি বলেন, لا يحل السحر إلا الساحر ‘‘একমাত্র যাদুকর ছাড়া অন্য কেউ যাদুকে হালাল মনে করে না।’’ ইবনুল কাইয়্যিম বলে...

গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া অথবা দোয়া করা শিরক

#গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া অথবা দোয়া করা শিরক  ১০ - গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া অথবা দোয়া করা শিরক ১। আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেছেন, وَلَا تَدْعُ مِنْ دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَنْفَعُكَ وَلَا يَضُرُّكَ فَإِنْ فَعَلْتَ فَإِنَّكَ إِذًا مِنَ الظَّالِمِينَ ﴿106﴾ وَإِنْ يَمْسَسْكَ اللَّهُ بِضُرٍّ فَلَا كَاشِفَ لَهُ إِلَّا هُوَ (يونس: 106-107) ‘‘আল্লাহ ছাড়া এমন কোন সত্তাকে ডেকোনা, যা তোমার কোন উপকার করতে পারবে না এবং ক্ষতিও করতে পারবে না। যদি তুমি এমন কারো তাহলে নিশ্চয়ই তুমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত। আর আল্লাহ যদি তোমাকে কোন বিপদে ফেলেন, তাহলে একমাত্র তিনি ব্যতীত আর কেউ তা থেকে তোমাকে উদ্ধার করতে পারবে না।’’ (ইউনুসঃ ১০৬, ১০৭) ২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেছেন, فَابْتَغُوا عِنْدَ اللَّهِ الرِّزْقَ وَاعْبُدُوهُ وَاشْكُرُوا لَهُ (ألعنكبوت: 17) ‘‘আল্লাহর কাছে রিযিক চাও এবং তাঁরই ইবাদত করো’’। (আনকাবুত : ১৭) ৩। আল্লাহ তাআলা অন্য এক আয়াতে এরশাদ করেছেন,     وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنْ يَدْعُو مِنْ دُونِ اللَّهِ مَنْ لَا يَسْتَجِيبُ لَهُ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ (الأحقاف: ...