সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

ডিসেম্বর, ২০১৬ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মানুষ আল্লাহ তাআলার পূর্ণাঙ্গ মর্যাদা নিরুপনে অক্ষম

##মানুষ আল্লাহ তাআলার পূর্ণাঙ্গ মর্যাদা নিরুপনে অক্ষম ১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, وَمَا قَدَرُوا اللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِ وَالْأَرْضُ جَمِيعًا قَبْضَتُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ (الزمر: 68) ‘‘তারা আল্লাহর যথার্থ মর্যাদা নিরুপন করতে পারেনি। কেয়ামতের দিন সমগ্র পৃথিবী তাঁর হাতের মুঠোতে থাকবে।’’ (ঝুমার : ৬৭) ২। ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, একজন ইহুদী পন্ডিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্ল­াম এর নিকট এসে বললো, ‘হে মুহাম্মদ, আমরা [তাওরাত কিতাবে] দেখতে পাই যে, আল্লাহ তাআলা সমস্ত আকাশ মন্ডলীকে এক আঙ্গুলে, সমস্ত যমীনকে এক আঙ্গুলে, বৃক্ষরাজিকে এক আঙ্গুলে, পানি এক আঙ্গুলে ভূতলের সমস্ত জিনিসকে এক আঙ্গুলে এবং সমস্ত সৃষ্টি জগতকে এক আঙ্গুলে রেখে বলবেন, আমিই সম্রাট।’ এ কথা শুনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্ল­াম ইহুদী পন্ডিতের কথার সমর্থনে এমন ভাবে হেসে দিলেন যে তাঁর দন্ত মোবারক দেখা যাচ্ছিল। অতপর তিনি وما قدروا الله حق قدره والارض جميعا قبضته يوم القيامة এ আয়াতটুকু পড়লেন। সহীহ মুসলিমের হাদীসে বর্ণিত আছে, পাহাড়- পর্বত এবং বৃক্ষরাজি এক হাতে থাকবে তারপর এগুলোকে ঝাকুনি দিয়...

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম কর্তৃক তাওহীদ সংরক্ষণ এবং শিরকের মূলোৎপাটন

##রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম কর্তৃক তাওহীদ সংরক্ষণ এবং শিরকের মূলোৎপাটন ১। আবদুল­াহ বিন আশশিখখির রা. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি বনী আমেরের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম এর নিকট গেলাম। আমরা তাকে উদ্দেশ্য করে বললাম, أنت سيدنا [আপনি আমাদের প্রভু] তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম বললেন, ألسيد الله [আল্লাহ তাআলাই হচ্ছেন প্রভু]। আমরা বললাম, ‘আমাদের মধ্যে মর্যাদার দিক থেকে আপনি সর্বশ্রেষ্ঠ এবং আমাদের মধ্যে সর্বাধিক দানশীল ও ধৈর্যশীল।’ এরপর তিনি বললেন, قولوا بقولكم أو بعض قولكم ولا يستجرينكم الشيطان ‘‘তোমরা তোমাদের বলে যাও। শয়তান যেন তোমাদের উপর সওয়ার না হতে পারে।’’ (আবু দাওদ) ২। আনাস রা. থেকে বর্ণিতা্ছে, কতিপয় লোক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­ামকে লক্ষ্য করে বললো, ‘‘হে আল্লাহর রাসূল, কে আমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি, এবং আমাদের প্রভূ তনয়’’ তখন তিনি বললেন, يا أيها الناس قولوا بقولكم ولا يستهوينكم الشيطان أنا محمد عبد الله ورسوله ما أحب أن ترفقونى فوق منزلتى التى أنزلنى الله عز وجل.  হে লোক সকল, তোমরা তোমাদের কথা...

সৃষ্টির কাছে আল্লাহর সুপারিশ করা যায় না

##সৃষ্টির কাছে আল্লাহর সুপারিশ করা যায় না ১। জুবাইর বিন মুতয়িম রা. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম এর কাছে আরব বেদুঈন এসে বললো, ‘ হে আল্লাহর রাসূল, আমাদের জীবন ওষ্ঠাগত, পরিবার পরিজন ক্ষুধার্ত, সম্পদ ধ্বংস প্রাপ্ত। অতএব আপনি আপনার রবের কাছে বৃষ্টির প্রার্থনা করুন। আমরা আপনার কাছে আল্লাহর সুপারিশ করছি, আর আল্লাহর কাছে আপনার সুপারিশ করছি’। এভাবে তিনি আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করতে লাগলেন যে তাঁর এবং সাহাবায়ে কেরামের চেহারায় রাগতবাব প্রতিভাত হচ্ছিল। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল­াম বললেন, ويحك أتدرى ما الله؟ إن شأن الله أعظم من ذالك أنه لا يستشفع بالله على أحد من خلقه. ‘‘তোমার ধ্বংস হোক, আল্লাহর মর্যাদা কত বড়, তা কি তুমি জানো? তুমি যা মনে করছো আল্লাহর মর্যাদা ও শান এর চেয়ে অনেক বেশী। কোন সৃষ্টির কাছেই আল্লাহর সুপারিশ করা যায় না।’’ (আবু দাউদ) এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায় ১। ‘আপনার কাছে আল্লাহর সুপারিশ করছি’نستشفع بالله عليك এ কথা যে ব্যক্তি বলেছিল, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম কর্তৃক সে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল। ২। সৃষ্...

আল্লাহর ইচ্ছাধীন বিষয়ে কসম করার পরিণতি

##আল্লাহর ইচ্ছাধীন বিষয়ে কসম করার পরিণতি ১। জুনদুব বিন আব্দুল­াহ রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম এরশাদ করেছেন, قال رجل والله لايغقر الله لفلان وقال الله عزوجل من ذا الدى يتألى على أن لا أغفر لفلان؟ إنى قد غفرت له وأحبطت عملك. (رواه مسلم) ‘‘এক ব্যক্তি বললো, ‘‘আল্লাহর কসম, অমুক ব্যক্তিকে আল্লাহ ক্ষমা করবেন না। তখন আল্লাহর তাআলা বললেন, ‘আমি অমুককে ক্ষমা করবোনা’ একথা বলে দেয়ার আস্পর্ধা কার আছে? আমি তাকেই ক্ষমা করে দিলাম। আর তোমার [কসম কারীর] আমল বাতিল করে দিলাম।’’ (মুসলিম) আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত হাদীসে আছে, ‘‘যে ব্যক্তি কসম করে উল্লে­খিত কথা বলেছিলো, সে ছিলো একজন আবেদ। আবু হুরায়রা বলেন ঐ ব্যক্তি একটি মাত্র কথার মাধ্যমে তাঁর দুনিয়া এবং আখেরাত উভয়টাই বরবাদ করে ফেলেছে। আলোচিত অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায়ঃ ১। আল্লাহর ইচ্ছাধীন বিষয়ে মাতববরী করার ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করা। [অর্থাৎ মাতববরী না করা] ২। আমাদের কারো জাহান্নাম তার জুতায় ফিতার চেয়েও অধিক নিকটবর্তী। ৩। জান্নাতও অনুরূপ নিকটবর্তী। ৪। এ অধ্যায়ে এ কথার প্রমাণ রয়েছে যে, একজন ল...

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের জিম্মাদারী সম্পর্কিত বিবরণ

##আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের জিম্মাদারী সম্পর্কিত বিবরণ ১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, وَأَوْفُوا بِعَهْدِ اللَّهِ إِذَا عَاهَدْتُمْ وَلَا تَنْقُضُوا الْأَيْمَانَ بَعْدَ تَوْكِيدِهَا (النحل: 91) ‘‘আল্লাহর নামে যখন তোমরা কোন শক্ত ওয়াদা করো তখন তা পুরা করো এবং দৃঢ়তার সাথে কোন কসম করলে তা ভঙ্গ করোনা। (নাহর: ৯১) ২। বুরাইদাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম ছোট হোক, বড়হোক [কোন যুদ্ধে] যখন সেনাবাহিনীতে কাউকে আমীর বা সেনাপতি নিযুক্ত করতেন, তখন তাকে ‘তাকওয়ার’ উপদেশ দিতেন এবং তার সাথে যে সব মুসলমান থাকতো তাদেরকেও উত্তম উপদেশ দিতেন। তিনি বলতেন, أغزوا باسم الله قاتلوا من كفر بالله أغزوا ولا تغلوا ولا تغدروا ولا تمثلوا ولاتقتلوا وليدا، وإذا لقيت عدوك من المشركين فادعهم إلى ثلاث حضال : أو خلال: فايتهن ما أجابوك فاقبل منهم وكف عنهم ثم ادعهم إلى الاسلام، فان أجابوك فاقبل منهم ، ثم أدعهم إلى التحول من دارهم إلى دار المهاجرين... إلى آخر الحديث. (رواه مسلم) ‘‘তোমরা আল্লাহর নামে যুদ্ধ করো। যারা আল্লাহকে অস্বীকার করে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করো। তোমরা যুদ্ধ করো, কিন্তু...

অধিক কসম সম্পর্কে শরিয়তের বিধান

##অধিক কসম সম্পর্কে শরিয়তের বিধান ১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, وَاحْفَظُوا أَيْمَانَكُمْ (المائدة: ৮৯) ‘‘তোমাদের শপথসমূহকে তোমরা হেফাজত করো’’। (মায়েদা : ৮৯) ২। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত আছে তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­ামকে একথা বলতে শুনেছি, الحلف منفقة للسلعة، ممحقة للكسب. (أخرجاه) ‘‘[অধিক] শপথ, সম্পদ বিনষ্ট কারী এবং উর্পন ধ্বংশ কারী।’’ (বুখারি ও মুসলিম) ৩। সালমান রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম এরশাদ করেছেন, ثلاثة لا يكلمهم الله ولا يزكيهم ولهم عذاب أليم: اشيمط زان، وعائل مستكبر، ورجل جعل الله بضاعته. لايشترى إلا بيمينه، ولا يبيع إلا بيمينه. (رواه الطبرانى بسند صحيح) ‘‘তিন শ্রেণীর লোকদের সাথে আল্লাহ তাআলা [কেয়ামতের দিন] কথা বলবেন না, তাদেরকে [গুনাহ মাফের মাধ্যমে] পবিত্র করবেন না, বরং তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। তারা হচ্ছে, বৃদ্ধ জিনাকারী, অহংকারী গরীব, আর যে ব্যক্তি তার ব্যবসায়ী পণ্যকে খোদা বানিয়েছে অর্থাৎ কসম করা ব্যতী সে পণ্য ক্রয়ও করে না, কসম করা ব্যতীত পণ্য বিক্রয়ও করেনা।’’ (তাবরানী) ৩। ইমরান বিন হুসাইন রা...

ছবি অঙ্কনকারী বা চিত্র শিল্পীদের পরিণাম

##ছবি অঙ্কনকারী বা চিত্র শিল্পীদের পরিণাম ১। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম এরশাদ করেছেন, قال الله تعالى ومن أظلم ممن ذهب يخلق كخلقى فليخلقوا ذرة، او ليخلقوا حبة، أو ليخلقوا شعيرة. (أخرجاه) ‘‘আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তার চেয়ে বড় জালেম আর কে হতে পারে, যে ব্যক্তি আমার সৃষ্টির মতো সৃষ্টি করতে চায়। তাদের শক্তি থাকলে তারা একটা অনু সৃষ্টি করুক অথবা একটি খাদ্যের দানা সৃষ্টি করুক অথবা একটি গমের দানা তৈরী করুক।’’ (বুখারি ও মুসলিম) ২। আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম এরশাদ করেছেন,     أشد الناس عذابا يوما القيامة الذين يضاهئون بخلق الله. (البخارى و مسلم) ‘‘কেয়ামতের দিন সবচেয়ে শাস্তি পাবে তারাই যারা আল্লাহ তাআলার সৃষ্টির মতো ছবি বা চিত্র অঙ্কন করে।’’ (বুখারি ও মুসলিম) ৩। ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­ামকে বলতে শুনেছি, كل مصـور فى النـار يجعل له بكل صورها نفـس يعذب بـها فى جهنم. (رواه مسلم) ‘‘প্রত্যেক চিত্র অঙ্কনকারীই জাহান্নামী। চিত্রকর যতটি [প্রাণীর...

তাকদীর অস্বীকারকারীদের পরিণতি

##তাকদীর অস্বীকারকারীদের পরিণতি ১। ইবনে ওমর রা. বলেছেন,     والذى نفس ابن عمر بيده لوكان لأحدهم مثل أحد ذهبا ثم أنفقه فى سبيل الله ما فبله الله منه. ‘‘সেই সত্তার কসম, যার হাতে ইবনে ওমরের জীবন, তাদের (তাকদীর অস্বীকারীদের) কারো কাছে যদি উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণও থাকে, অতঃপর তা আল্লাহর রাস্তায় দান করে দেয়, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা উক্ত দান কবুল করবেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তাকদীরের প্রতি ঈমান আনে’’। অতঃপর তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাণী দ্বারা নিজ বক্তব্যের পক্ষে দলীল পেশ করেন, الإيمان أن نومن بالله وملائكته وكتبه و رسله واليوم الأخر و تؤمن بالقدر خيره وشره. (رواه مسلم) ‘‘ঈমান হচ্ছে এই যে, তুমি আল্লাহ তাআলা, তাঁর সমুদয় ফিরিস্তা, তাঁর যাবতীয় [আসমানী] কিতাব, তাঁর সমস্ত রাসূল এবং আখেরাতের প্রতি ঈমান আনয়ন করবে সাথে সাথে তাকদীর এবং এর ভাল-মন্দের প্রতি ঈমান আনয়ন করবে।’’ (মুসলিম) ২। উবাদা বিন সামেত রা. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি তার ছেলেকে বললেন, ‘‘হে বৎস, তুমি ততক্ষণ পর্যন্ত ঈমানের স্বাদ অনুভব করতে পারবে না, যতক্ষণ না তুমি এ কথা বিশ্বাস করবে, ‘তোমার জীব...

সূরা আল- ইমরানের ১৫৪ নং আয়াতের তাফসীর ও সূরা ‘‘ফাতাহ’’ এর ৬ নং আয়াতের তাফসীর।

##সূরা আল- ইমরানের ১৫৪ নং আয়াতের তাফসীর ও সূরা ‘‘ফাতাহ’’ এর ৬ নং আয়াতের তাফসীর। ১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, يَظُنُّونَ بِاللَّهِ غَيْرَ الْحَقِّ ظَنَّ الْجَاهِلِيَّةِ يَقُولُونَ هَلْ لَنَا مِنَ الْأَمْرِ مِنْ شَيْءٍ قُلْ إِنَّ الْأَمْرَ كُلَّهُ لِلَّهِ (آل عمران: 154) ‘‘তারা জাহেলী যুগের ধারণার মত আল্লাহ সম্পর্কে অবাস্তব ধারণা পোষণ করে। তারা বলে, ‘আমাদের জন্য কি কিছু করণীয় আছে? [হে রাসূল ] আপনি বলে দিন, ‘সব বিষয়ই আল্লাহর ইখতিয়ারভূক্ত।’’ [আল-ইমরান . ১৫৪] ২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেছেন, الظَّانِّينَ بِاللَّهِ ظَنَّ السَّوْءِ عَلَيْهِمْ دَائِرَةُ السَّوْءِ (الفتح: 6) ‘‘তারা [মুনাফিকরা] আল্লাহ সম্পর্কে খারাপ ধারণা পোষণ করে, তারা নিজেরাই খারাপ ও দোষের আবর্তে নিপতিত।’’ (আল-ফাতাহ . ৬] প্রথম আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনুল কাইয়্যিম বলেছেন, ظن এর ব্যাখ্যা এটাই করা হয়েছে যে, মুনাফিকদের ধারণা হচ্ছে আল্লাহ তাআলা তাঁর রাসূলকে সাহায্য করেন না। তাঁর বিষয়টি অচিরেই নিঃশেষ হয়ে যাবে। ব্যাখ্যায় আরো বলা হয়েছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম এর উপর যে সব বিপদাপদ এসেছে তা আদৌ আল্লাহর ফয়সালা...

বাতাসকে গালি দেয়া নিষেধ

##বাতাসকে গালি দেয়া নিষেধ ১। উবাই ইবনে কা’ব রা. থেকে বর্ণিত আছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম এরশাদ করেছেন, لا تسبوا الريح، فإذا رايتم ما تكرهون فقولوا: ‘‘তোমরা বাতাসকে গালি দিও না। তোমরা যদি বাতাসের মধ্যে তোমাদের অপছন্দনীয় কিছু প্রত্যক্ষ করো তখন তোমরা বলো,  أللهم إنا نسألك من خير هذه الريح وخير ما فيها وخير ما أمرت به، ونعوذبك من شر هذه الريح وشر ما فيها وشر ما أمرت به. (صحيح الترمذى) ‘‘হে আল্লাহ এ বাতাসের যা কল্যাণকর, এতে যে মঙ্গল নিহিত আছে এবং যতটুকু কল্যাণ করার জন্য সে অদিষ্ট হয়েছে ততটুকু কল্যাণ ও মঙ্গল আমরা তোমার কাছে প্রার্থনা করি। আর এ বাতাসের যা অনিষ্টকর, তাতে যে অমঙ্গল লুকায়িত আছে, এবং যতটুকু অনিষ্ট সাধনের ব্যাপারে সে আদিষ্ট হয়েছে তা [অমঙ্গল ও অনিষ্ঠতা] থেকে আমরা তোমার কাছে আশ্রয় চাই। [তিরমিজি হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন] এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায় . ১। বাতাসকে গালি দেয়া নিষেধ। ২। মানুষ যখন কোন অপছন্দনীয় জিনিস দেখবে তখন কল্যাণকর কথার মাধ্যমে দিক নির্দেশনা দান করবে। ৩। বাতাস আল্লাহর পক্ষ থেকে আদিষ্ট, একথার দিক নির্দেশনা। ৪। বাতাস কখ...

বাক্যের মধ্যে ‘যদি’ ব্যবহার সংক্রান্ত আলোচনা

##বাক্যের মধ্যে ‘যদি’ ব্যবহার সংক্রান্ত আলোচনা ১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, يَقُولُونَ لَوْ كَانَ لَنَا مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ مَا قُتِلْنَا هَاهُنَا (آل عمران ১৫৪) ‘‘তারা বলে, ‘যদি’ এ ব্যাপারে আমাদের করণীয় কিছু থাকতো, তাহলে আমরা এখানে নিহত হতাম না’’ (আল ইমরান . ১৫৪) ২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেছেন, الَّذِينَ قَالُوا لِإِخْوَانِهِمْ وَقَعَدُوا لَوْ أَطَاعُونَا مَا قُتِلُوا (آل عمران: 168) ‘‘যারা ঘরে বসে থেকে [যুদ্ধে না গিয়ে তারেদ [যোদ্ধা] ভাইদেরকে বলে, আমাদের কথা মতো যদি তারা চলতো। তবে তারা নিহত হতো না। (আল-ইমরান . ১৬৮) ৩। সহীহ বুখারীতে আয়েশা রা. হবে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, أحرص على ما ينفعك، واستعن بالله ولا تعجز، وإن أصابك شئ فلا تقل لو أننى فعلت كذا لكان كذا وكذا ولكن قل: قدر الله وما شاء فعل، فإن لو تفتح عمل الشيطان ‘‘যে জিনিস তোমার উপকার সাধন করবে, তার ব্যাপারে আগ্রহী হও এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য চাও, আর কখনো অক্ষমতা প্রকাশ করো না। যদি তোমার উপর কোন বিপদ এসে পড়ে, তবে এ কথা বলো না, ‘যদি আমি এরকম করতাম, তাহলে অবশ্যই এমন হতো...

‘‘বি ওয়াজহিল্লাহ’ বলে একমাত্র জান্নাত ব্যতীত আর কিছুই প্রার্থনা করা যায় না।

##‘‘বি ওয়াজহিল্লাহ’ বলে একমাত্র জান্নাত ব্যতীত আর কিছুই প্রার্থনা করা যায় না। ১। জাবের রা. থেকে বর্নিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম এরশাদ করেছেন, لا يسأل بوجه الله إلا الجنة (رواه أبوداؤد) ‘‘বিওয়াজহিল­াহ [আল্লাহর চেহারার ওসীলা] দ্বারা একমাত্র জান্নাত ছাড়া অন্য কিছুই চাওয়া যায় না।’’ (আবু দাউদ) এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায় . ১। চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্থাৎ জান্নাত ব্যতীত ‘বিওয়াজহিল­াহ’’ দ্বারা অন্য কিছু চাওয়া যায় না। ২। আল্লাহর ‘চেহারা’ নামক সিফাত বা গুনের স্বীকৃতি। Facebook page

আল্লাহর ওয়াস্তে আশ্রয় প্রার্থনাকারীকে আশ্রয় দান।

##আল্লাহর ওয়াস্তে আশ্রয় প্রার্থনাকারীকে আশ্রয় দান। আল্লাহর ওয়াস্তে সাহায্য চাইলে বিমুখ না করা ১। ইবনে ওমর রা. থেকে বর্নিত আছে, রাসূল সাল্লাল্ল­াহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম এরশাদ করেছে,  من سأل بالله فأعطوه، ومن أستعاذ بالله فأعيذوه، ومن دعاكم فأجيبوه، ومن صنع إليكم معروفا فكافئوه، فإن لم تجدوا ما تكافئونه فادعوا له حتى تروا أنكم قد كافأتموه. (رواه أبوداود والنسائى بسند صحيح) ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর ওয়াস্তে চায় তাকে দান করো। যে ব্যক্তি আল্লাহর ওয়াস্তে আশ্রয় প্রার্থনা করে, তাকে আশ্রয় দাও। যে ব্যক্তি আল্লাহর নামে ডাকে, তার ডাকে সাড়া দাও। যে ব্যক্তি তোমাদের জন্য ভাল কাজ করে, তার যথোপযুক্ত প্রতিদান দাও। তার প্রতিদানের জন্য যদি তোমরা কিছুই না পাও, তাহলে তার জন্য এমন দোয়া করো, যার ফলে এটাই প্রমাণিত হয় যে, তোমরা তার প্রতিদান দিতে পেরেছো। ’’ (আবু দাউদ, নাসায়ী) এ অধ্যায় থেকে নিম্ন বর্ণিত বিষয়গুলো জানা যায় . ১। আল্লাহর ওয়াস্তে আশ্রয় প্রার্থনাকারীকে আশ্রয় দান। ২। আল্লাহর ওয়াস্তে সাহায্য প্রার্থনাকারীকে সাহায্য প্রদান। ৩। [নেক কাজের] আহবানে সাড়া দেয়া। ৪। ভাল কাজের প্রতিদান দেয়া। ৫। ...

আমার দাস- দাসী বলা নিষিদ্ধ।

##আমার দাস- দাসী বলা নিষিদ্ধ। ১। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে রাসূল (স:) এরশাদ করেছেন, لا يقل أحدكم أطعم ربك، وضئ ربك، وليقل: سيدى ومولاى، ولا يقل أحدكم عبدى وأمتى، وليقل : فتاى وفتاتى و غلامى. ‘‘ তোমাদের কেউ যেন না বলে, ‘তোমার প্রভুকে খাইয়ে দাও’ ‘তোমার প্রভুকে অজু করাও’। বরং সে যেন বলে, ‘&আমার নেতা’ ‘আমার মনিব’। তোমাদের কেউ যেন না বলে ‘আমার দাস’ ‘আমার দাসী’। বরং সে যেন বলে, ‘আমার ছেলে, আমার মেয়ে, আমার চাকর।’’ এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায় . ১। আমার দাস- দাসী বলা নিষিদ্ধ। ২। কোন গোলাম যেন তার মনিবকে না বলে, ‘আমার প্রভু’। এ কথাও যেন না বলে, ‘তোমার রবকে আহার করাও’। ৩। প্রথম শিক্ষণীয় বিষয় হলো, ‘আমার ছেলে’ ‘আমার মেয়ে’ ‘আমার চাকর’ বলতে হবে। ৪। দ্বিতীয় শিক্ষণীয় বিষয় হলো, ‘আমার নেতা,’ ‘আমার মনিব’ বলতে হবে। ৫। লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের প্রতি শতর্কতা অবলম্বন। আর তা হচ্ছে, শব্দ ব্যবহার ও প্রয়োগের মধ্যেও তাওহীদের শিক্ষা বাস্তবায়ন করা। Facebook page

‘হে আল্লাহ তোমার মর্জি হলে আমাকে মাফ করো’ প্রসঙ্গে

##‘হে আল্লাহ তোমার মর্জি হলে আমাকে মাফ করো’ প্রসঙ্গে ১। সহীহ হাদীসে আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত আছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম এরশাদ করেছেন , لا يقل أحدكم اللهم اغفر لى إن شئتওاللهم ارحمنى إن شئت، ليعزم المسألة فإن الله لا مكره له. ‘‘তোমাদের মধ্যে কেউ যেন একথা না বলে, ‘হে আল্লাহ, তোমার ইচ্ছা হলে আমাকে মাফ করে দাও, ‘হে আল্লাহ, তোমার ইচ্ছা হলে আমাকে করুণা করো’। বরং দৃঢ়তার সাথে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবে। কেননা আল্লাহর উপর জবরদস্তী করার মত কেউ নেই।’’ (বুখারি) ২। সহী মুসলিম শরীফে বর্ণিত আছে, وليعظم الرغبة فإن الله لا يتعاظمه شيئ أعطاه ‘‘আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার উৎসাহ উদ্দীপনাকে বৃদ্ধি করা উচিৎ। কেননা আল্লাহ বান্দাকে যাই দান করেন না কেন তার কোনটাই তাঁর কাছে বড় কিংবা কঠিন কিছুই নয়।’’ Facebook page

‘‘আসসালামু আলাল্লাহ’’ [আল্লাহর ] উপর শান্তি বর্ষিত হোক] বলা যাবে না

##‘‘আসসালামু আলাল্লাহ’’ [আল্লাহর ] উপর শান্তি বর্ষিত হোক] বলা যাবে না ১। সহীহ বুখারীতে ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেন, আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম এর সাথে নামাযে মগ্ন ছিলাম। তখন আমরা বললাম, السلام على الله من عباده، السلام على فلان فلان ‘‘আল্লাহর উপর তাঁর বান্দাদের পক্ষ থেকে শান্তি হোক, অমুক অমুকের উপর শান্তি বর্ষিত হোক।’’ তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম বললেন, لا تقولوا السلام على الله، فإن الله هو السلام ‘‘আল্লাহর উপর শান্তি হোক, এমন কথা তোমরা বলো না। কেননা আল্লাহ নিজেই ‘সালাম’ [শান্তি]’’ এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায় . ১। ‘সালাম’ এর ব্যাখ্যা। ২। ‘সালাম’ হচ্ছে সম্মানজনক সম্ভাষণ। ৩। এ [‘সালাম’] সম্ভাষণ আল্লাহর ব্যাপারে প্রযোজ্য নয়। ৪। আল্লাহর ব্যাপারে ‘সালাম’ প্রযোজ্য না হওয়ার কারণ। ৫। বান্দাহগণকে এমন সম্ভাষণ শিক্ষা দেয়া হয়েছে যা আল্লাহর জন্য সমীচীন ও শোভনীয়। Facebook page

আল্লাহ তাআলার আসমায়ে হুসনা [বা সুন্দরতম নামসমূহ]

##আল্লাহ তাআলার আসমায়ে হুসনা [বা সুন্দরতম নামসমূহ] ১। আল্ল­াহ তাআলা এরশাদ করেছেন, وَلِلَّهِ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَى فَادْعُوهُ بِهَا وَذَرُوا الَّذِينَ يُلْحِدُونَ فِي أَسْمَائِهِ (الأعراف: 180) ‘‘আল্ল­াহর সুন্দর সুন্দর অনেক নাম রয়েছে। তোমরা এসব নামে তাঁকে ডাকো। আর যারা তাঁর নামগুলোকে বিকৃত করে তাদেরকে পরিহার করে চলো।’’ (আ’রাফ . ১৮০) ২। ইবনে আবি হাতিম ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণনা করেছেন, يلحدون فى أسمائه [তারা তাঁর নামগুলো বিকৃত করে] এর অর্থ হচ্ছে তারা শিরক করে্ ৩। ইবনে আববাস রা. থেকে আরো বর্ণিত আছে, মুশরিকরা ‘ইলাহ’ থেকে ‘লাত’ আর ‘আজীজ’ থেকে ‘উযযা’ নামকরণ করছে। ৪। আ’মাস থেকে বর্ণিত আছে, মুশরিকরা আল্ল­াহর নামসমূহের মধ্যে এমন কিছু [শিরকী বিষয়] ঢুকিয়েছে যার অস্তিত্ব আদৌ তাতে নেই। এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায় . ১। আল্লাহর নামসমূহ যথাযথ স্বীকৃতি ২। আল্ল­াহর নামসমূহ সুন্দরতম হওয়া। ৩। সুন্দর ও পবিত্র নামে আল্ল­াহকে ডাকার নির্দেশ। ৪। যেসব মূর্খ ও বেইমান লোকেরা আল্ল­াহর পবিত্র নামের বিরুদ্ধাচারণ করে তাদেরকে পরিহার করে চলা। ৫। আল্লাহর নামে বিকৃতি ঘটানোর ব্য...

যেসব নামের মধ্যে গাইরুল­াহর ইবাদতের অর্থ নিহিত রয়েছে সে নাম রাখা হারাম।

##যেসব নামের মধ্যে গাইরুল­াহর ইবাদতের অর্থ নিহিত রয়েছে সে নাম রাখা হারাম। ১। আল্ল­াহ তাআলার বাণী . فَلَمَّا آَتَاهُمَا صَالِحًا جَعَلَا لَهُ شُرَكَاءَ فِيمَا آَتَاهُمَا (الأعراف: 190) ‘‘অতঃপর আল্লাহ যখন উভয়কে একটি সুস্থ ও নিখূঁত সন্তান দান করলেন, তখন তারা তাঁর দানের ব্যাপারে অন্যকে তাঁর শরিক গণ্য করতে শুরু করলো।’’ (আ’রাফ . ১৯০) ইবনে হযম (রহ:) বলেন, ঊলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে একমত হয়েছেন যে, এমন প্রত্যেক নামই হারাম, যা দ্বারা গাইরুল্লাহর ইবাদত করার অর্থ বুঝায়। যেমন, আবদু ওমর, আবদুল কা’বা এবং এ জাতীয় অন্যান্য নাম। তবে আবদুল মোত্তালিব এর ব্যতিক্রম। ইবনে আববাস (রাঃ) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘আদম আ. যখন বিবি হাওয়ার সাথে মিলিত হলেন, তখন হাওয়া গর্ভবতী হলেন। এমতাবস্থায় শয়তান আদম ও হাওয়ার কাছে এসে বললো, ‘আমি তোমাদের সেই বন্ধু ও সাথী, যে নাকী তোমাদের জান্নাত থেকে বের করেছে। তোমরা অবশ্যই আমার আনুগত্য করো, নতুবা গর্ভস্থ সন্তানের মাথায় উটের শিং গজিয়ে দিবো, তখন সন্তান তোমার পেট কেটে বের করতে হবে। আমি অবশ্যই একাজ করে ছাড়বো।’’ শয়তান এভাবে তাদেরকে ভয় দেখাচ্ছিল। শয়তান বললো, তোমরা তোমাদের সন্ত...

সূরা ফুসসিলাতের ৫০ নং আয়াতের তাফসীর ও আশ্চর্য ধরনের কিসসা এবং তাতে নিহিত উপদেশাবলী

##সূরা ফুসসিলাতের ৫০ নং আয়াতের তাফসীর ও আশ্চর্য ধরনের কিসসা এবং তাতে নিহিত উপদেশাবলী ১। আল্ল­াহ তাআলার বাণী . وَلَئِنْ أَذَقْنَاهُ رَحْمَةً مِنَّا مِنْ بَعْدِ ضَرَّاءَ مَسَّتْهُ لَيَقُولَنَّ هَذَا لِي (فصلت:50) ‘‘দুঃখ- দুর্দশার পর যদি আমি মানুষকে আমার রহমতের আস্বাদ গ্রহণ করাই, তাহলে সে অবশ্যই বলে, এ নেয়ামত আমারই জন্য হয়েছে।’’ (ফুসসিলাত . ৫০) বিখ্যাত মুফাসসির মুজাহিদ বলেন, ‘ইহা আমরই জন্য’ এর অর্থ হচ্ছে, ‘আমার নেক আমলের বদৌলতেই এ নেয়ামত দান করা হয়েছে, আমিই এর হকদার।’ ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, সে এ কথা বলতে চায়, ‘নেয়ামত আমার আমলের কারণেই’ এসেছে অর্থাৎ এর প্রকৃত হকদার আমিই। আল্ল­াহ তাআলা আরো বলেছেন, قَالَ إِنَّمَا أُوتِيتُهُ عَلَى عِلْمٍ عِنْدِي (القصص :78) ‘‘সে বলে, ‘নিশ্চয়ই এ নেয়ামত আমার ইলম ও জ্ঞানের জন্য আমাকে দেয়া হয়েছে।’’ (কাসাসঃ৭৮) কাতাদাহ (রাঃ) বলেন, ‘উপার্জনের রকমারী পন্থা সম্পর্কিত জ্ঞান থাকার কারণে আমি এ নেয়ামত প্রাপ্ত হয়েছি।’ অন্যান্য মুফাসসিরগণ বলেন ‘আল্লাহ তাআলার ইলম মোতাবেক আমি এর [নেয়ামতের] হকদার। আমার মর্যাদার বদৌলতেই এ নেয়ামত প্রাপ্ত হয়েছি।’ মুজাহিদের এ কথার ...

আল্লাহর যিকির, কুরআন এবং রাসূল সম্পর্কিত কোন বিষয় নিয়ে খেল- তামাশা করা প্রসংগে

##আল্লাহর যিকির, কুরআন এবং রাসূল সম্পর্কিত কোন বিষয় নিয়ে খেল- তামাশা করা প্রসংগে ১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, وَلَئِنْ سَأَلْتَهُمْ لَيَقُولُنَّ إِنَّمَا كُنَّا نَخُوضُ وَنَلْعَبُ (التوبة :65) ‘‘আপনি যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, তবে তারা অবশ্যই বলবে, আমরা খেল- তামাশা করছিলাম।’’ (ফুসসিলাত . ৫০) ২। ইবনে ওমর, মুহাম্মদ বিন কা’ব, যায়েদ বিন আসলাম এবং কাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, [তাদের একের কথা অপরের কথার মধ্যে সামঞ্জস্য আছে] তাবুক যুদ্ধে একজন লোক বললো, এ ক্বারীদের [কুরআন পাঠকারীর] মত এত অধিক পেটুক, কথায় এত অধিক মিথ্যুক এবং যুদ্ধের ময়দানে শত্রুর সাক্ষাতে এত অধিক ভীরু আর কোন লোক দেখিনি। অর্থাৎ লোকটি তার কথা দ্বারা মুহাম্মদ সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম এবং তাঁর ক্বারী সাহাবায়ে কেরামের দিকে ইঙ্গিত করেছিলো। আওফ বিন মালেক লোকটিকে বললেন, ‘তুমি মিথ্যা কথা বলেছো। কারণ, তুমি মুনাফিক।’ আমি অবশ্যই রাসূল সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়াসাল্ল­ামকে এ খবর জানাবো। আওফ তখন এ খবর জানানোর জন্য রাসূল সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়াসাল্ল­াম এর কাছে চলে গেলেন। গিয়ে দেখলেন কুরআন তাঁর চেয়েও অগ্রগামী [অর্থাৎ আওফ ...

আল্লাহর সম্মানার্থে [শিরকী] নামের পরিবর্তন

##আল্লাহর সম্মানার্থে [শিরকী] নামের পরিবর্তন ১। আবু শুরাইহ হতে বর্ণিত আছে এক সময় তার কুনিয়াত ছিল আবুল হাকাম [জ্ঞানের পিতা] রাসূল সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম তাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, إن الله هو الحكم وإليه الحكم ‘‘আল্লাহ তাআলাই হচ্ছে জ্ঞান সত্তা এবং তিনিই জ্ঞানের আধার’’ তখন আবু শুরাইহ বললেন, ‘আমার কওমের লোকেরা যখন কোন বিষয়ে মতবিরোধ করে, তখন ফয়সালার জন্য আমার কাছে চলে আসে। তারপর আমি তাদের মধ্যে ফয়সালা করে দেই। এতে উভয় পক্ষই সন্তুষ্ট হয়ে যায়।’ রাসুল সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম একথা শুনে বললেন, এটা কতইনা ভাল! তোমার কি সন্তানাদি আছে? আমি বললাম, ‘শুরাইহ’ ‘মুসলিম’ এবং ‘আবদুল্লাহ’ নামের তিনটি ছেলে আছে।’ তিনি বললেন, ‘তাদের মধ্যে সবার বড় কে?’ আমি বললাম,‘শুরাইহ’। তিনি বললেন, ‘‘অতএব তুমি আবু শুরাইহ’’ [শুরাইহের পিতা] (আবু দাউদ)। এ অধ্যায় থেকে নিম্ন বর্ণিত বিষয়গুলো জানা যায় . ১। আল্ল­াহর আসমা ও সিফাত অর্থাৎ নাম ও গুণাবলীর সম্মান করা; যদিও এর অর্থ বান্দার উদ্দেশ্য না হয়।       ২। আল্ল­াহর নাম ও সিফাতের সম্মানার্থে নাম পরিবর্তন করা। ৩। কুনিয়াতের জন্য বড় সন্তান...

কাযীউল কুযাত [মহা বিচারক] প্রভৃতি নামকরণ প্রসংগে

##কাযীউল কুযাত [মহা বিচারক] প্রভৃতি নামকরণ প্রসংগে ১। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত সহীহ হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, إن أخنع اسم عند الله رجل تسمى ملك الأملاك، لا مالك إلا الله. ‘‘আল্ল­াহ তাআলার কাছে ঐ ব্যক্তির নাম সবচেয়ে নিকৃষ্ট, যার নামকরণ করা হয় ‘রাজাধিরাজ’ বা ‘প্রভূর প্রভূ’। আল্ল­াহ ব্যতীত কোন প্রভূ নেই’’। (বুখারি) সুফিয়ান সওরী বলেছেন, ‘রাজাধিরাজ’ কথাটি ‘শাহানশাহ’ এর মতই একটি নাম। আরো একটি বর্ণনা মতে রাসূল সাল্ল­াল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম এরশাদ করেছন- أغيظ رجل على الله يوم القيامة وأخبيه ‘‘কেয়ামতের দিন আল্ল­াহর কাছে সবচেয়ে নিকৃষ্ট এবং খারাপ ব্যক্তি হচ্ছে [যার নামকরণ করা হচ্ছে রাজাধিরাজ]’। উল্লেখিত হাদীসে أخنع শব্দের অর্থ হচ্ছে সবচেয়ে নিকৃষ্ট। এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায়. ১। ‘রাজাধিরাজ’ নামকরণের প্রতি নিষেধাজ্ঞা। ২। ‘রাজাধিরাজ’ এর অর্থ সুফিয়ান সওরী কর্তৃক বর্ণিত ‘শাহানশাহ’ এর অর্থের অনুরূপ। ৩। বর্ণিত ব্যাপারে এবং এ জাতীয় বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করা। এক্ষেত্রে অন্তরে কি নিয়ত আছে তা বিবেচ্য নয়। ৪। বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণ...

যে ব্যক্তি যমানাকে গালি দেয় সে আল্লাহকে কষ্ট দেয়

##যে ব্যক্তি যমানাকে গালি দেয় সে আল্লাহকে কষ্ট দেয় ১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, وَقَالُوا مَا هِيَ إِلَّا حَيَاتُنَا الدُّنْيَا نَمُوتُ وَنَحْيَا وَمَا يُهْلِكُنَا إِلَّا الدَّهْرُ (الجاثية: 24) ‘‘অবিশ্বাসীরা বলে, ‘শুধু দুনিয়ার জীবনই আমাদের জীবন। আমরা এখানেই মরি ও বাঁচি। যমানা ব্যতীত অন্য কিছুই আমাদেরকে ধ্বংস করতে পারে না।’’ (জাসিয়া : ২৪) ২। সহীহ হাদীসে আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্ল­াল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, يؤذيني ابن آدم يسب الدهر وأنا الدهر، أقلب الليل والنهار. لا تسبوا الدهر فإن الله هو الدهر ‘‘তোমরা যমানাকে গালি দিওনা। কারণ, আল্লাহই হচ্ছেন যমানা।’’ এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায়. ১। কাল বা যমানাকে গালি দেয়া নিষেধ। ২। যমানাকে গালি দেয়া আল্ল­াহকে কষ্ট দেয়ারই নামান্তর। ৩। فإن الله هو الدهر ‘আল্ল­াহই হচ্ছেন যমানা’ রাসূল সাল্লাল্ল­াহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এর বাণীর মধ্যে গভীর চিন্তার বিষয় নিহিত আছে। ৪। বান্দার অন্তরে আল্ল­াহকে গালি দেয়ার ইচ্ছা না থাকলেও অসাবধনতা বশতঃ মনের অগোচরে তাঁকে গালি দিয়ে ফেলতে পারে।...

‘আল্লাহ এবং আপনি যা চেয়েছেন’ বলা

##‘আল্লাহ এবং আপনি যা চেয়েছেন’ বলা ১- কুতাইলা হতে বর্ণিত আছে, একজন ইহুদী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল­াম এর কাছে এসে বললো, ‘আপনারাও আল্ল­াহর সাথে শিরক করে থাকেন।’ কারণ আপনারা বলে থাকেন, ماشاءالله وشئت আল্ল­াহ এবং আপনি যা চেয়েছেন। আপনারা আরো বলে থাকেন والكعبة অর্থাৎ কাবার কসম। এরপর রাসূল সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়াসাল­াম বললেন, মুসলমানদের মধ্যে যারা কসম বা হলফ করতে চায়, তারা যেন বলে ورب الكعبة ‘কাবার রবের কসম আর যেন ماشاء الله ثم شئت আল্ল­াহ যা চেয়েছেন অতঃপর আপনি যা চেয়েছেন’ একথা বলে। (নাসায়ী) ২। ইবনে আববাস রা. হতে আরো একটি হাদীসে বর্ণিত আছে, এক ব্যক্তি রাসূল সাল্ল­াল্ল­াহু আলাইহি ওয়াসাল­াম এর উদ্দেশ্যে বললো, ماشاء الله وشئت [আপনি এবং আল্ল­াহ যা ইচ্ছা করেছেন] তখন রাসূল সাল্ল­াল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্ল­াম বললেন, أجعلتنى لله ندا ‘‘তুমি কি আল্লাহর সাথে আমাকে শরিক করে ফেলেছো?’’ আসলে আল্ল­াহ যা ইচ্ছা করেছেন, তা একক ভাবেই করেছেন। ৩। আয়েশা রা. এর মায়ের দিক দিয়ে ভাই, তোফায়েল থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি স্বপ্নে দেখতে পেলাম, আমি কয়েকজন ইয়াহুদীর কাছে এসেছি। আমি তাদেরকে বললাম, তোমরা অবশ্যই...

আল্লাহর নামে কসম করে সন্তুষ্ট না থাকার পরিণাম

##আল্লাহর নামে কসম করে সন্তুষ্ট না থাকার পরিণাম ১। ইবনে ওমর রা. থেকে বর্নিত আছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল­াম এরশাদ করেছেন, لا تحلفوا بابائكم من حلف بالله فليصدق ومن حلف له با لله فليرض وم لم يرض فليس من الله. (رواه ابن ماجه بسند حسن) ‘‘তোমরা তোমাদের বাপ- দাদার নামে কসম করো না, যে ব্যক্তি আল্লাহর নামে কসম করে, তার উচিৎ কসমকে বাস্তবায়িত করা। আর যে ব্যক্তির উদ্দেশ্যে আল্ল­াহর নামে কসম করা হলো, তার উচিৎ উক্ত কসমে সন্তুষ্ট থাকা। আল্ল­াহর কসমে যে ব্যক্তি সন্তুষ্ট হলো না, আল্লাহর পক্ষ থেকে তার কল্যাণের কোন আশা নেই।’’ (ইবনে মাজা) ১। বাপ-দাদার নামে কসম করার উপর নিষেধাজ্ঞা। ২। যার জন্য আল্ল­াহর নামে কসম করা হলো, তার প্রতি [কসমের বিষয়ে] সন্তুষ্ট থাকার নির্দেশ। ৩। আল্ল­াহর নামে কসম করার পর, যে উহাতে সন্তুষ্ট থাকে না, তার প্রতি ভয় প্রদর্শন ও হুশিয়ারি উচ্চারণ। Facebook page

আল্লাহ তাআলার সাথে কাউকে শরিক না করা

##আল্লাহ তাআলার সাথে কাউকে শরিক না করা ১। আল্ল­াহ তাআলা এরশাদ করেছেন, فَلَا تَجْعَلُوا لِلَّهِ أَنْدَادًا وَأَنْتُمْ تَعْلَمُونَ ﴿البقرة:22﴾ ‘‘অতএব জেনে শুনে তোমরা আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করো না।’’ ২। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনে আববাস রা. বলেন أنداد [আন্দাদ] হচ্ছে এমন শিরক যা অন্ধকার রাত্রে নির্মল কাল পাথরের উপর পিপিলিকার পদচারণার চেয়েও সুক্ষ্ম। এর উদাহরণ হচ্ছে, তোমার এ কথা বলা, ‘আল্লাহর কসম এবং হে অমুক, তোমার জীবনের কসম, আমার জীবনের কসম।’ ‘যদি ছোট্ট কুকুরটি না থাকতো, তাহলে অবশ্যই আমাদের ঘরে চোর প্রবেশ করতো।’ ‘হাঁসটি যদি ঘরে না থাকতো, তাহলে অবশ্যই চোর আসতো।’ কোন ব্যক্তি তার সাথীকে এ কথা বলা, ‘আল্ল­াহ তাআলা এবং তুমি যা ইচ্ছা করেছো।’ কোন ব্যক্তির এ কথা বলা, ‘আল্ল­াহ এবং অমুক ব্যক্তি যদি না থাকে, তাহলে অমুক ব্যক্তিকে এ কাজে রেখো না।’ এগুলো সবই শিরক। (ইবনে আবি হাতেম) ৩। ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল­াম এরশাদ করেছেন, من حلف بغير الله فقد كفر أو أشرك (رواه الترمذى وحسنه وصححه الحاكم) ‘‘যে ব্যক্তি গাইরুল­াহর নামে শপথ করলো, সে কুফরী অথবা শিরক করলো...

আল্লাহর নেয়ামত অস্বীকার করার পরিণাম

##আল্লাহর নেয়ামত অস্বীকার করার পরিণাম ১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন يَعْرِفُونَ نِعْمَةَ اللَّهِ ثُمَّ يُنْكِرُونَهَا وَأَكْثَرُهُمُ الْكَافِرُونَ ﴿النحل:83﴾ ‘‘তারা আল্ল­াহর নেয়ামত চিনে, অতঃপর তা অস্বীকার করে।’’ (নাহল : ৮৩) এর মর্মার্থ বুঝাতে মুজাহিদ বলেন, এর অর্থ হচ্ছে, কোন মানুষের এ কথা বলা ‘এ সম্পদ আমার, যা আমার পূর্ব পুরুষ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি।’ আ’উন ইবনে আবদিল্ল­াহ বলেন, ‘এর অর্থ হচ্ছে, কোন ব্যক্তির এ কথা বলা, ‘অমুক ব্যক্তি না হলে এমনটি হতোনা।’ ইবনে কুতাইবা এর ব্যাখ্যায় বলেন, ‘মুশরিকরা বলে, ‘‘এটা হয়েছে আমাদের ইলাহদের সুপারিশের বদৌলতে।’’ আবু আববাস যায়েদ ইবনে খালেদের হাদীসে- যাতে একথা আছে, ‘আল্ল­াহ তা’আলা বলেন, أصبح من عبادى مؤمن بى وكافر ‘‘আমার কোন বান্দার ভোরে নিদ্রা ভঙ্গ হয় মোমিন অবস্থায়, আবার কারো ভোর হয় কাফির অবস্থায়’’- উল্লেখ করে বলেন, এ ধরনের অনেক বক্তব্য কুরআন ও সুন্নায় উলে­খ করা হয়েছে। যে ব্যক্তি নেয়ামত দানের বিষয়টি গাইরুল­াহর সাথে সম্পৃক্ত করে এবং আল্ল­াহর সাথে কাউকে শরিক করে, আল্ল­াহ তার নিন্দা করেন। উপরোক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় কোন কোন সালাফে- সালেহী...

আল্লাহর ‘আসমা ও সিফাত’ [নাম ও গুণাবলী] অস্বীকারকারীর পরিণাম

##আল্লাহর ‘আসমা ও সিফাত’ [নাম ও গুণাবলী] অস্বীকারকারীর পরিণাম ১। আল্ল­াহ তাআলা এরশাদ করেছেন, وَهُمْ يَكْفُرُونَ بِالرَّحْمَنِ (ألرعد: 30) ‘‘এবং তারা রহমান [আল্লাহর গুণবাচক নাম] কে অস্বীকার করে।’’ (রা’দ: ৩০) ২। সহীহ বুখারীতে বর্ণিত একটি হাদীসে আলী রা. বলেন, حدثوا الناس بما يعرفون أتريدون أن يكذب الله ورسوله ‘‘লোকদেরকে এমন কথা বলো, যা দ্বারা তারা [আল্ল­াহ ও রাসূল সম্পর্কে সঠিক কথা জানতে পারে। তোমরা কি চাও যে, আল্ল­াহ এবং তাঁর রাসূলকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা হোক?’’ ৩। ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত আছে, আল্ল­াহর গুণাবলী সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল­াম থেকে একটি হাদীস শুনে এক ব্যক্তি আল্ল­াহর গুণকে অস্বীকার করার জন্য একদম ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলো তখন তিনি বললেন, এরা এ উভয়ের মধ্যে পার্থক্য কি করে করলো? তারা মুহকামের [বা সুস্পষ্ট] আয়াত ও হাদিসের ক্ষেত্রে নমনীয়তা দেখালো, আর মুতাশাবাহ [অস্পষ্ট আয়াত ও হাদিসের ক্ষেত্রে ] ধ্বংসাত্মক পথ অবলম্বন করলো?’’ কুরাইশরা যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল­াম এর কাছে [আল্ল­াহর গুণবাচক নাম] ‘রাহমানের] উল্যে­খ করতে শুনতে পেলো, তখন তারা ‘রা...

সূরা নিসার ৬০ নং আয়াতের তাফসীর এবং তাগুতের মর্মার্থ বুঝার ক্ষেত্রে সহযোগিতা।

##সূরা নিসার ৬০ নং আয়াতের তাফসীর এবং তাগুতের মর্মার্থ বুঝার ক্ষেত্রে সহযোগিতা। ১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ يَزْعُمُونَ أَنَّهُمْ آَمَنُوا بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنْزِلَ مِنْ قَبْلِكَ يُرِيدُونَ أَنْ يَتَحَاكَمُوا إِلَى الطَّاغُوتِ وَقَدْ أُمِرُوا أَنْ يَكْفُرُوا بِهِ وَيُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَنْ يُضِلَّهُمْ ضَلَالًا بَعِيدًا. ﴿ألنساء: 60﴾ ‘‘আপনি কি তাদেরকে দেখেননি যারা আপনার উপর যে কিতাব নাযিল হয়েছে এবং আপনার পূর্বে যা নাযিল হয়েছে তার প্রতি ঈমান এনেছে বলে দাবী করে? তারা বিচার ফয়সালার জন্য তাগুত [খোদাদ্রোহী শক্তি] এর কাছে যায়, অথচ তা অস্বীকার করার জন্য তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে আর শয়তান তাদেরকে চরম গোমরাহীতে নিমজ্জিত করতে চায়।’’ (নিসা . ৬০) وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ لَا تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ قَالُوا إِنَّمَا نَحْنُ مُصْلِحُونَ .﴿ البقرة: 11﴾ ‘‘তাদেরকে যখন বলা হয়, তোমরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না, তখন তারা বলে, আমরাইতে শান্তিকামী।’’ (বাকারা . ১১) ৩। আল্লাহ তাআলা অন্যত্র এরশাদ করেছেন, وَلَا تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ بَعْدَ إِصْلَاحِهَا ...

যে ব্যাক্তি আল্লাহর হালালকৃত জিনিস হারাম এবং হারামকৃত জিনিসকে হালাল করার ব্যাপারে [অন্ধভাবে], আলেম, বজুর্গ ও নেতাদের আনুগত্য করলো, সে মূলত তাদেরকে রব হিসেবে গ্রহণ করলো

##যে ব্যাক্তি আল্লাহর হালালকৃত জিনিস হারাম এবং হারামকৃত জিনিসকে হালাল করার ব্যাপারে [অন্ধভাবে], আলেম, বজুর্গ ও নেতাদের আনুগত্য করলো, সে মূলত তাদেরকে রব হিসেবে গ্রহণ করলো ১। আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, يوشك أن تنــزل عليكم حجارة من السماء أقول: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم وتقولون : قال أبوبكر وعمر ‘‘তোমাদের উপর আকাশ থেকে পাথর বর্ষিত হওয়ার সময় প্রায় ঘনিয়ে এসেছে। কারণ, আমি বলছি, ‘‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল­াম বলেছেন।’’ অথচ তোমরা বলছো, ‘‘আবুবকর এবং ওমর (রাঃ) বলেছেন।’’ ২। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রাঃ) বলেছেন, ‘‘ঐ সব লোকদের ব্যাপারে আমার কাছে খুবই অবাক লাগে, যারা হাদিসের সনদ ও ‘সিহহাত’ [বিশুদ্ধতা] অর্থাৎ হাদিসের পরস্পরা ও সহীহ হওয়ার বিষয়টি জানার পরও সুফইয়ান সওরীর মতামতকে গ্রহণ করে। অথচ আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَنْ تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ ﴿النور:63﴾ ‘‘যারা তাঁর নির্দেশের বিরোধিতা করে, তাদের এ ভয় করা উচিৎ যে, তাদের উপর কোন কঠিন পরীক্ষা কিংবা কোন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি এসে পড়ে।’’ (নূর . ৮...

নিছক পার্থিব স্বার্থে কোন কাজ করা শিরক

##নিছক পার্থিব স্বার্থে কোন কাজ করা শিরক ১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, مَنْ كَانَ يُرِيدُ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِينَتَهَا نُوَفِّ إِلَيْهِمْ أَعْمَالَهُمْ فِيهَا وَهُمْ فِيهَا لَا يُبْخَسُونَ ﴿15﴾ أُولَئِكَ الَّذِينَ لَيْسَ لَهُمْ فِي الْآَخِرَةِ إِلَّا النَّارُ وَحَبِطَ مَا صَنَعُوا فِيهَا وَبَاطِلٌ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ ﴿16﴾ ﴿هود: 15-16﴾ ‘‘যারা শুধু দুনিয়ার জীবন এবং এর চাকচিক্য কামনা করে, আমি তাদের সব কাজের প্রতিদান দুনিয়াতেই দিয়ে থাকি।’’ (হুদ : ১৫-১৬) ২। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে সহীহ হাদীসে বর্ণিত আছে রাসূল (স:) এরশাদ করেছেন, تعس عبد الدينار، تعس عبد الدرهم، تعس عبد الخميصة، تعس عيد الخميلة إن أعطى رضي وإن لم يعط سخط، وإذا شيك فلا انتقش، طوبى لعبد أخذ بعنان فرسه فى سبيل الله اشعث راسه، مغبرة فدماه إن كان فى الحراسة، كان فى الحراسة، وإن كان فى الساقة كان فى الساقة، إن استأذن لم نؤذن له وإن شفيع لم يشفع . ‘‘দীনার ও দেরহাম অর্থাৎ টাকা-পয়সার পূজারীরা ধ্বংস হোক। রেশম পূজারী [পোষাক- বিলাসী] ধ্বংস হোক। তাকে দিতে পারলেই খুশী হয়, না দিতে পারলে রাগান্বিত হয়। সে ধ্বংস হোক, তার আ...

রিয়া (প্রদর্শনেচ্ছা) প্রসংগে শরিয়তের বিধান

##রিয়া (প্রদর্শনেচ্ছা) প্রসংগে শরিয়তের বিধান আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, قُلْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِثْلُكُمْ يُوحَى إِلَيَّ أَنَّمَا إِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ. (الكهف:১১০) ‘‘[ হে মুহাম্মদ], আপনি বলে দিন, আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ। আমার নিকট এ মর্মে অহী পাঠানো হয় যে, তোমাদের ইলাহই একক ইলাহ।’’ (কাহাফ: ১১০) ২। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে ‘মারফু’ হাদীসে বর্ণিত আছে, আল্লাহ তাআলা বলেন, أنا أغنى الشركاء عن الشرك، من عمل عملا أشرك معي فيه غيري تركته وشركه. (رواه مسلم) ‘‘আমি অংশীদারদের শিরক (অর্থাৎ অংশিদারিত্ব) থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। যে ব্যক্তি কোন কাজ করে ঐ কাজে আমার সাথে অন্য কাউকে শরিক করে, আমি [ঐ] ব্যক্তিকে এবং শিরককে [অংশীদারকে ও অংশিদারিত্বকে] প্রত্যাখ্যান কির।’’ (মুসলিম) ৩। আবু সাঈদ (রাঃ) থেকে অন্য এক ‘মারফু’ হাদীসে বর্ণিত আছে, ألا أخبركم بما هو أخوف عليكم عندي من المسيح الدجال؟ قالوا: بلى، قال : الشرك الخفي يقوم الرجل فيصلي فيزين صلاته، لما يرى من نظر رجل. (رواه أحمد) ‘‘আমি কি তোমাদের এমন বিষয়ে সংবাদ দেব না? যে বিষয়টি আমার কাছে ‘মসীহ দাজ্জালের’ চেয়েও ভয়ঙ্কর?’’ সাহাবায়ে কেরা...

তাকদীরের [ফায়সালার] উপর ধৈর্য ধারণ করা ঈমানের অঙ্গ

##তাকদীরের [ফায়সালার] উপর ধৈর্য ধারণ করা ঈমানের অঙ্গ ১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, وَمَنْ يُؤْمِنْ بِاللَّهِ يَهْدِ قَلْبَهُ. (التغابن:১১) ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ঈমান আনে, তার অন্তরকে তিনি হেদায়াত দান করেন।’’ (তাগাবুনঃ ১১) ২। আলকামা (রাঃ) বলেছেন, ঐ ব্যক্তিই মোমিন, যে ব্যক্তি বিপদ আসলে মনে করে তা আল্ল­াহর পক্ষ থেকে এসেছে। এর ফলে সে বিপদগ্রস্থ হয়েও সন্তুষ্ট থাকে এবং বিপদকে খুব সহজেই স্বীকার করে নেয়। ৩। সহীহ মুসলিমে আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল­াম এরশাদ করেছেন, ‘‘মানুষের মধ্যে এমন দু’টি [খারাপ] স্বভাব রয়েছে যার দ্বারা তাদের কুফরী প্রকাশ পায়। একটি হচ্ছে, বংশ উলে­খ করে খোটা দেয়া, আর একটি হচ্ছে মৃত ব্যক্তির জন্য বিলাপ করা।’’ ৪। ইমাম বুখারি ও মুসলিম ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে মারফু হাদীসে বর্ণনা করেন, إذا أراد الله بعبده الخير عجل له العقوبة فى الدنيا وإذا أراد بعبده الشر أمسك عنه بذنبـــه حتى يوافى به يوم القيامة ‘‘আল্লাহ তা’আলা যখন তাঁর কোন বান্দার মঙ্গল করতে চান, তখন তাড়াতাড়িকরে দুনিয়াতেই তার [অপরাধের] শাস্তি দিয়ে থাকেন। পক্ষান্তরে তিনি...

সূরা আ’রাফের ৯৯নং আয়াতের তাফসীর। এবং সূরা হিজরের ৫৬ নং আয়াতের তাফসীর।

##সূরা আ’রাফের ৯৯নং আয়াতের তাফসীর। এবং সূরা হিজরের ৫৬ নং আয়াতের তাফসীর। ১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, أَفَأَمِنُوا مَكْرَ اللَّهِ فَلَا يَأْمَنُ مَكْرَ اللَّهِ إِلَّا الْقَوْمُ الْخَاسِرُونَ. ﴿الاعراف: 99 ﴾ ‘‘তারা কি আল্লাহর পাকড়াও থেকে বাঁচার ব্যাপারে নিশ্চিন্ত [নির্ভয়] হয়ে গেছে? বস্ত্ততঃ আল্ল­াহর পাকড়াও থেকে বাঁচার ব্যাপারে একমাত্র হতভাগ্য ক্ষতিগ্রস্ত ছাড়া অন্য কেউ ভয়-হীন হতে পারে না।’’ (আরাফঃ ৯৯)। ২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেছেন, وَمَنْ يَقْنَطُ مِنْ رَحْمَةِ رَبِّهِ إِلَّا الضَّالُّونَ. (ألحجر:৫৬) ‘‘একমাত্র পথভ্রষ্ট লোকেরা ছাড়া স্বীয় রবের রহমত থেকে আর কে নিরাশ হতে পারে? (সূরা হিজর : ৫৬) ৩। ইবনে আববাস (রাঃ) থেকে বর্নিত আছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল­ামকে কবীরা গুনাহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জবাবে বলেছেন, ‘কবীরা গুনাহ হচ্ছে . ألشرك بالله، واليأس من روح الله، والأمن من مكر الله. ‘‘আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করা, আল্ল­াহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া এবং আল্লাহর পাকড়াও থেকে নিজেকে নিরাপদ মনে করা।’’ ৪। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেছেন, أكبر الكبائر : ال...

তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর উপর ভরসা

##তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর উপর ভরসা ১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, وَعَلَى اللَّهِ فَتَوَكَّلُوا إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ ﴿المائدة: ২৩﴾ ‘‘তোমরা যদি মুমিন হয়ে থাকো, তাহলে একমাত্র আল্লাহর উপরই ভরসা করো।’’ (মায়েদা : ২৩) ২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেছেন, إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ اللَّهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ. (الانفال: ২) ‘‘একমাত্র তারাই মোমিন যাদের সামনে আল্লাহর কথা স্মরণ করা হলে তাদের অন্তরে ভয়ের সঞ্চার হয়।’’ (আনফাল . ২) وَمَنْ يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ. (الطلاق: ৩) ‘‘ যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্য আল্লাহ তাআলাই যথেষ্ট।’’ (সূরা তালাক . ৩) ৪। ইবনে আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, حسبنا الله ونعم الوكيل এ কথা ইবরাহীম (আঃ) তখন বলেছিলেন, যখন তাঁকে অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করা হয়েছিলো। আর মুহাম্মদ (স:) একথা বলেছিলেন তখন, যখন তাঁকে বলা হলো, الَّذِينَ قَالَ لَهُمُ النَّاسُ إِنَّ النَّاسَ قَدْ جَمَعُوا لَكُمْ فَاخْشَوْهُمْ فَزَادَهُمْ إِيمَانًا . ‘‘লোকেরা আপনাদের বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী বাহিনী জড়ো করেছে। অতএব তাদেরকে ভয় করুন। ত...

আল্লাহর ভয়

##আল্লাহর ভয় ১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, إِنَّمَا ذَلِكُمُ الشَّيْطَانُ يُخَوِّفُ أَوْلِيَاءَهُ فَلَا تَخَافُوهُمْ وَخَافُونِ إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ ﴿آل عمران: 175﴾ ‘‘এরা হলো শয়তান, যারা তোমাদেরকে তার বন্ধুদের (কাফের বেঈমান) দ্বারা ভয় দেখায়। তোমরা যদি প্রকৃত মোমেন হয়ে থাকো। তাহলে তাদেরকে [শয়তানের সহচারদেরকে] ভয় করো না বরং আমাকে ভয় করো।’’ (আল ইমরান . ১৭৫) ২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেছেন, إِنَّمَا يَعْمُرُ مَسَاجِدَ اللَّهِ مَنْ آَمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآَخِرِ وَأَقَامَ الصَّلَاةَ وَآَتَى الزَّكَاةَ وَلَمْ يَخْشَ إِلَّا اللَّهَ . (التوبة: 18) ‘‘আল্লাহর মসজিদগুলোকে একমাত্র তারাই আবাদ করতে পারে যারা আল্লাহ এবং আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে, নামাজ কায়েম করে, যাকাত আদায় করে এবং একমাত্র আল্লাহকে ছাড়া আর কাউকে ভয় করে না।’’ (তাওবা : ১৮) ৩। আল্লাহ তাআলা অন্য আয়াতে এরশাদ করেছেন, وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَقُولُ آَمَنَّا بِاللَّهِ فَإِذَا أُوذِيَ فِي اللَّهِ جَعَلَ فِتْنَةَ النَّاسِ كَعَذَابِ اللَّهِ (العنكبوت: 10) ‘‘মানুষের মধ্যে এমন কিছু মানুষ আছে যারা বলে, আমরা আল্লাহর উ...

সূরা বাকারার ১৬ নং আয়াতের তাফসীর। এবং সূরা তাওবার ২৪ নং আয়াতের তাফসীর।

##সূরা বাকারার ১৬ নং আয়াতের তাফসীর। এবং সূরা তাওবার ২৪ নং আয়াতের তাফসীর। ১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَتَّخِذُ مِنْ دُونِ اللَّهِ أَنْدَادًا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللَّهِ. (البقرة: 165) ‘‘মানুষের মধ্যে এমন মানুষও রয়েছে যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে সদৃশ স্থির করে, আল্লাহকে ভালবাসার ন্যায় তাদেরকে ভালবাসে।’’। (বাকারা : ১৬৫) ২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেছেন, قُلْ إِنْ كَانَ آَبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ وَإِخْوَانُكُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ وَعَشِيرَتُكُمْ وَأَمْوَالٌ اقْتَرَفْتُمُوهَا وَتِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَمَسَاكِنُ تَرْضَوْنَهَا أَحَبَّ إِلَيْكُمْ مِنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ (التوبة: 24) ‘‘হে রাসূল, আপনি বলে দিন, ‘যদি তোমাদের মাতা-পিতা, সন্তান-সন্ততি, ভাই-বোন, তোমাদের স্ত্রী, আত্মীয়-স্বজন, তোমাদের অর্জিত ধন-সম্পদ, তোমাদের ঐ ব্যবসা যার লোকসান হওয়াকে তোমরা অপছন্দ করো, তোমাদের পছন্দনীয় বাড়ী-ঘর, তোমাদের নিকট আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং তাঁরই পথে জিহাদ করার চেয়ে বেশী প্রিয় হয়, তাহলে তোমরা আল্লাহর চূড়ান্ত ফায়সালা আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করো।’’ (তাওবা : ২৪) ৩। সাহাব...

নক্ষত্রের ওসীলায় বৃষ্টি কামনা করা

##নক্ষত্রের ওসীলায় বৃষ্টি কামনা করা ১। আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেছেন, وَتَجْعَلُونَ رِزْقَكُمْ أَنَّكُمْ تُكَذِّبُونَ.  (الواقعة : ৮২) ‘‘তোমরা [নক্ষত্রের মধ্যে তোমাদের] রিজিক নিহত আছে মনে করে আল্লাহর নেয়ামতকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছো।’’ (ওয়াকেয়া . ৮২) ২। আবু মালেক আশআ’রী (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, أربع في أمتي من أمر الجاهلية لا يتركونهن : الفخر با لأحساب، والطعن فى الأنساب، والإستسقاء بالنجوم، والنياحة وقال: النائحة إذا لم تتب قبل موتها تقام يوم القيامة وعليها سربال من قطران ودرع من حرب. (رواه مسلم) ‘জাহেলী যুগের চারটি কুস্বভাব আমার উম্মতের মধ্যে বিদ্যমান থাকবে, যা তারা পুরোপুরি পরিত্যাগ করতে পারবেনা। এক : আভিজাত্যের অহংকার করা। দুই : বংশের বদনাম গাওয়া। তিন : নক্ষত্রের মাধ্যমে বৃষ্টির পানি কামনা করা এবং চার : মৃত ব্যাক্তির জন্য বিলাপ করা। তিনি আরো বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির জন্য বিলাপ কারিনী তার মৃত্যুর পূর্বে যদি তাওবা না করে, তবে কেয়ামতের দিন তেল চিট-চিটে জামা আর মরিচা ধরা বর্ম পরিধান করে উঠবে।’ (মুসলিম) ৩। ইমাম বুখারি ও মুসলিম...

জ্যোতির্বিদ্যা সম্পর্কীয় শরিয়তের বিধান

##জ্যোতির্বিদ্যা সম্পর্কীয় শরিয়তের বিধান ইমাম বুখারি (রহ:) তাঁর সহীহ গ্রন্থে বলেছেন, কাতাদাহ (রাঃ) বলেছেন, ‘‘আল্লাহ তাআলা এসব নক্ষত্ররাজিকে তিনটি উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন, আকাশের সৌন্দর্যের জন্য, আঘাতের মাধ্যমে শয়তান বিতাড়নের জন্য এবং [দিক ভ্রান্ত পথিকদের] নিদর্শন হিসেবে পথের দিশা পাওয়ার জন্য। যে ব্যক্তি এ উদ্দেশ্য ছাড়া এর ভিন্ন ব্যাখ্যা দিবে সে ভুল করবে এবং তার ভাগ্য নষ্ট করবে। আর এমন জটিল কাজ তার ঘাড়ে নিবে যে সম্পর্কে তার কোন জ্ঞানই থাকবে না।’’ কাতাদাহ (রাঃ) চাঁদের কক্ষ সংক্রান্ত বিদ্যার্জন অর্থাৎ জ্যোতির্বিদ্যা অপছন্দ করতেন। আর উ’য়াইনা এ বিদ্যার্জনের অনুমতি দেননি। উভয়ের কাছ থেকে হারব (রহ:) একথা বর্ণনা করেছেন। ইমাম আহমদ এবং ইসহাক (রহ:) [চাদের] কক্ষপথ জানার অনুমতি দিয়েছেন। আবু মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, ‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, ثلاثة لا يدخلون الجنة: مدمن الخمر، وقاطع الرحم، ومصدق بالسحر. (رواه أحمد وابن حبان فى صحيحه) তিন শ্রেণীর লোক জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, ১। মাদকাসক্ত ব্যক্তি ২। আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী এবং ৩। যাদুর প্রতি বিশ্...

কুলক্ষণ সম্পর্কীয় বিবরণ

##কুলক্ষণ সম্পর্কীয় বিবরণ ১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, أَلَا إِنَّمَا طَائِرُهُمْ عِنْدَ اللَّهِ وَلَكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ ﴿ألاعراف:131﴾ ‘‘মনে রেখো, আল্লাহর কাছেই রয়েছে তাদের কুলক্ষণসমূহের চাবিকাঠি। কিন্তু তাদের অধিকাংশ লোকই তা বুঝে না। (আরাফ: ১৩১) ২। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন . قالو طائركم معكم (يس : ১৯) ‘‘তারা বললো, তোমাদের দুর্ভাগ্য তোমাদের সাথেই রয়েছে।’’ (ইয়াসিন : ১৯) ৩। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, لا عدوى ولا طيرة، ولا هامة ولا صفر، (أخرحاه) ‘‘দ্বীন ইসলামে সংক্রামক ব্যাধি, কুলক্ষণ বা দুর্ভাগ্য, কথার কুলক্ষণ বলতে কিছুই নেই।’’ (বুখারি ও মুসলিম) [মুসলিমের হাদীসে ‘নক্ষত্রের প্রভাবে বৃষ্টিপাত, রাক্ষস বা দৈত্য বলতে কিছুই নেই’ এ কথাটুকু অতিরিক্ত আছে] বুখারি ও মুসলিমে আনাস (রাঃ) থেকে আরো বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, لا عدوى وطيرة ويعجبني الفالও قالوا: مالفال؟ قال الكلمة الطيبة. ‘‘ইসলামে সংক্রামক ব্যাধি আর কুলক্ষণ বলতে কিছুই নেই। তবে ‘ফাল’ আমাকে অবাক করে [অ...

নাশরাহ বা প্রতিরোধমূলক যাদু

#নাশরাহ বা প্রতিরোধমূলক যাদু ১। সাহাবী জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নাশরাহ বা প্রতিরোধমূলক যাদু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো। জবাবে তিনি বললেন, هى من عمل الشيطان. (رواه أحمد و أبوداود) ‘‘এটা হচ্ছে শয়তানের কাজ’’ (আহমাদ, আবু দাউদ) আবু দাউদ বলেন, ইমাম আহমাদ (রহ:)-কে নাশরাহ [প্রতিরোধমূলক যাদু] সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো। জবাবে তিনি বলেছেন, ‘‘ইবনে মাসউদ (রাঃ) এর [নাশরাহর] সব কিছুই অপছন্দ করতেন।’’ সহীহ বুখারীতে কাতাদাহ (রাঃ) হ'তে বর্ণিত আছে, আমি ইবনুল মুসাইয়্যিবকে বললাম, ‘‘একজন মানুষের অসুখ হয়েছে অথবা তাকে তার স্ত্রীর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে, এমতাবস্থায় তার এ সমস্যার সমধান করা কিংবা প্রতিরোধমূলক যাদু [নাশরাহ] এর মাধ্যমে চিকিৎসা করা যাবে কি? তিনি বললেন, ‘এতে কোন দোষ নেই।’ কারণ তারা এর [নাশরাহ] দ্বারা সংশোধন ও কল্যাণ সাধন করতে চায়। যা দ্বারা মানুষের কল্যাণ ও উপকার সাধিত হয় তা নিষিদ্ধ নয়।’’ হাসান (রাঃ) থেকে বর্নিত আছে তিনি বলেন, لا يحل السحر إلا الساحر ‘‘একমাত্র যাদুকর ছাড়া অন্য কেউ যাদুকে হালাল মনে করে না।’’ ইবনুল কাইয়্যিম বলে...

গনক

#গনক ১। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এক স্ত্রী থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, من أتى عرافا فسأله عن شيئ فصدقه لم تقبل له صلاة أربعين يوما ‘‘যে ব্যক্তি কোন গণকের কাছে আসল, তারপর তাকে [ভাগ্য সম্পর্কে] কিছু জিজ্ঞাসা করলো, অতঃপর গণকের কথাকে সত্য বলে বিশ্বাস করল, তাহলে চল্লিশ দিন পর্যন্ত তার নামাজ কবুল হবে না। (মুসলিম) ২। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, من أتى كاهنا فصدقه بما يقول كفر بما أنزل على محمد. (رواه ابو داود) ‘‘যে ব্যাক্তি গণকের কাছে আসলো, অতঃপর গণক যা বললো তা সত্য বলে বিশ্বাস করলো, সে মূলতঃ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর যা নাযিল করা হয়েছে তা অস্বীকার করলো। (সহীহ বুখারি ও মুসলিমের শর্ত মোতাবেক হাদীসটি সহীহ। আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসায়ী ইবনে মাজা ও হাকিম এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন)। আবু ইয়ালা ইবনে মাসউদ থেকে অনুরূপ মাউকুফ হাদীস বর্ণনা করেছেন। ৩। ইমরান বিন হুসাইন থেকে মারফু’ হাদীসে বর্ণিত আছে, ليس منا من تطير أو تطير له، أوتكهن أو تكهن له أو سحر أو س...